ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পশ্চিম তীরে বসতির অনুমোদন ইসরাইলের

পশ্চিম তীরে বসতির অনুমোদন ইসরাইলের

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে আবারো নতুন করে কয়েক হাজার অবৈধ বসতি নির্মাণ করতে চলেছে ইসরাইল। এ লক্ষ্যে ভূখণ্ডটির ক্ষমতাসীন কট্টরপন্থি জোট সরকার নতুন আবাসন ইউনিট নির্মাণ পরিকল্পনার অনুমোদনও দিয়েছে। এতে করে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি আবাসন ইউনিট নির্মাণ করতে পারবে ইসরাইল। গতকাল এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলের কট্টরপন্থি জোট সরকার ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমতীরে হাজার হাজার নতুন আবাসন ইউনিটের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে এবং গত ২৭ বছর ধরে মেনে চলা নানা পদক্ষেপকে পাশ কাটিয়ে অবৈধ বসতি নির্মাণ ত্বরান্বিত করার জন্য অতি-ডানপন্থি অর্থমন্ত্রীকে ক্ষমতাও দিয়েছে। পশ্চিম জেরুজালেম থেকে আল জাজিরার ইমরান খান বলেছেন, গত রোববার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার মন্ত্রিসভায় অবৈধ বসতি নির্মাণের এই পদক্ষেপটিকে অনুমোদন করেছেন। একইসঙ্গে অবৈধ বসতি নির্মাণের সমর্থক অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচকে বসতি নির্মাণের জন্য ছয়-স্তরের প্রক্রিয়া বাইপাস করার অনুমতিও দেয়া হয়েছে। আর এটি আন্তর্জাতিক আইনের অবৈধ বলে বিবেচিত। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং বেজালেল স্মোট্রিচের মধ্যে এই চুক্তিটি বেশ কিছু সময় ধরে আলোচনার টেবিলে ছিল জানিয়ে ইমরান খান বলেন, এই অনুমোদন উগ্রপন্থি অর্থমন্ত্রীকে ‘সম্পূর্ণ অবৈধ বসতি-নির্মাণের প্রক্রিয়া কার্যকরভাবে গ্রহণ করার’ অনুমতি দেবে। বেজালেল স্মোট্রিচ বলেছেন: ‘আমরা বসতি স্থাপন প্রকল্পের উন্নয়ন অব্যাহত রাখব এবং ভূখণ্ডজুড়ে ইসরাইলি নিয়ন্ত্রণ জোরদার করব।’ আল জাজিরা বলছে, অধিকৃত পশ্চিমতীরের বিভিন্ন এলাকায় ৪ হাজার ৫৬০টি আবাসন ইউনিটের অনুমোদনের এই পরিকল্পনা ইসরাইলের সুপ্রিম প্ল্যানিং কাউন্সিলের এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আগামী সপ্তাহে এই কাউন্সিল বৈঠকে বসবে। এদিকে ইসরাইলের সর্বশেষ এই পদেক্ষেপে বিভিন্ন গোষ্ঠী গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, এতে করে পুরো পশ্চিম তীর শিগগিরই ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে। আল জাজিরা বলছে, ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকে নিজেদের অগ্রাধিকারের শীর্ষে রেখেছে ইসরাইলের কট্টরপন্থি সরকার। নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন এই জোট সরকারের মধ্যে অতি-অর্থোডক্স দল এবং একটি অতি-ডানপন্থি অতি-জাতীয়তাবাদী ধর্মীয় উপদলও রয়েছে। ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বসতি স্থাপন কার্যক্রম অনুমোদন করা ‘পশ্চিম তীরের দখল কার্যক্রমকে পরিপূর্ণ করার কাজ বিপজ্জনকভাবে বাড়িয়ে দেবে’। এদিকে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজার শাসন ক্ষমতায় থাকা হামাস বলেছে, এই পদক্ষেপটি শুধুমাত্র এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলবে। অন্যদিকে ফাতাহ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘গাজা উপত্যকা থেকে বসতি স্থাপনকারীদের যেভাবে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল ঠিক সেভাবেই পশ্চিম তীর থেকে তাদের সরিয়ে দেয়া হবে’। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের সঙ্গে যৌথ অর্থনৈতিক কমিটির বৈঠক বয়কট করবে। গতকাল সোমবার এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া নেতানিয়াহুর দল লিকুদ পার্টি ‘ইসরাইলের ভূখণ্ডের সমস্ত অংশে অবৈধ বসতি স্থাপনের অগ্রগতি ও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর এর মধ্যে অধিকৃত পশ্চিম তীরের গ্যালিলি, নেগেভ, গোলান হাইটস এবং জুডিয়া ও সামারিয়ার নামও রয়েছে।’ মূলত গ্যালিলি, নেগেভ, গোলান হাইটস এবং জুডিয়া ও সামারিয়া অধিকৃত ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীরের এলাকা এবং বাইবেলের নামানুসারে ইসরাইল এসব ফিলিস্তিনি অঞ্চলকে এই নামেই ডেকে থাকে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত