হুমকির মুখে ভূমধ্যসাগরের মূল্যবান প্রবাল

প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

গেল কয়েক শতাব্দী ধরেই মূল্যবান প্রবালের বাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত ইতালির দক্ষিণে নেপলস শহর। ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির একেবারে পাদদেশে তোরে দেল গ্রেকো নামের ছোট শহর প্রবাল বাণিজ্যের বিশ্ব-রাজধানী হিসেবে পরিচিত। কোরালের গহনার চাহিদা আবার বেড়ে চলায় শহরের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলো সন্তুষ্ট। আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ও অলংকারের ব্র্যান্ডগুলো তোরে দেল গ্রেকোয় ভিড় করছে। অবশেষে এমন এক দোকানদারের দেখা পাওয়া গেল, যিনি প্রবালের বেআইনি ব্যবসা নিয়ে কথা বলতে প্রস্তুত। মিকো কাতাল্দো বর্তমানে এক ‘গোল্ড রাশ’ উদ্দীপনা টের পাচ্ছেন, যেমনটা আগে কখনো দেখা যায়নি। ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষ এই সমস্যা সম্পর্কে আগের তুলনায় বেশি সচেতন হয়েছে বটে, কিন্তু চোরাচালানকারীদের দল ঠিকই ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করছে। মিকো বলেন, আমি খুব সাহস করে কিছু বলছি। তারা স্পেনে প্রবাল চালান করতে দেয়। এবার ভূমধ্যসাগরের অন্য দিকে নজর দেওয়া যাক। তিউনিশিয়ার উত্তরে ভূমধ্যসাগর উপকূলে তাবার্কা নামের জেলেদের এক গ্রাম অবস্থিত। কয়েক শতাব্দী ধরে সেখানে মূল্যবান কোরালকে ঘিরেই কর্মকাণ্ড চলছে। তবে ইতালির মতো সেখানে ‘গোল্ড রাশ’র মতো উন্মাদনা চোখে পড়ছে না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, দশটির মধ্যে নয়টি দোকানই বন্ধ হয়ে গেছে। যথেষ্ট প্রবালের অভাবে এমন দূরাবস্থা। সালাহ বজাউয়ি নিজে অনেককাল ডুবুরি হিসেবে প্রবাল সংগ্রহ করেছেন। তবে আইনি পথেই তিনি সেই কাজ করেছেন বলে জানালেন। এখন বয়স বেড়ে গেছে। তবে তিনি নিজের নৌকা অন্য ডুবুরিদের ব্যবহার করতে দেন। কোনো একটি টিলার উপর ১০ কিলো প্রবাল বেড়ে উঠলে যন্ত্র দিয়ে বেআইনিভাবে মাছ ধরার কারণে তার আশপাশের জৈব পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। তখন ৯ কিলো কোরাল হারিয়ে যায়, মাত্র ১ কিলো উত্তোলন করা হয়। তারপর সেই পণ্য তিউনিশিয়ার মাধ্যমে গোটা বিশ্বে চালান করা হয়। বিশেষ করে ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চল ও এশিয়ায় চাহিদা বেড়েই চলেছে। আলজেরিয়া, তিউনিশিয়া ও স্পেনের এক যৌথ নেটওয়ার্ক ৩ বছর আগে জানতে পেরেছে, যে কোটি কোটি ইউরো মূল্যের কোরাল গোটা বিশ্বে চোরাচালান করা হয়েছে। তিউনিশিয়ার উপকূলরক্ষী বাহিনীর আদাম বেন আরাফা বলেন, তারা প্রায়ই বিজার্টে ও রাজধানী তিউনিসে পণ্য জমা রাখে এবং রপ্তানির চেষ্টা করে। ইতালিই হলো ক্লাসিক রুট। সেখান থেকে প্রবাল প্রায়ই ভারত পর্যন্ত পাঠানো হয়। মূল্যবান প্রবালকে ঘিরে সব সমস্যার যে একটাই উৎস, শিল্পের কারিগর হিসেবে মুরাদের কাছে তা একেবারে স্পষ্ট।