জিনপিং স্বৈরশাসক

নিজের বক্তব্যে অটল বাইডেন

প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বৈরশাসক বা একনায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পরাশক্তি এই দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে সামান্য অগ্রগতির প্রশংসা করার কয়েকদিন পর তিনি ওই মন্তব্য করেন। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনাও করেছিল চীন। তবে এরপরও জিনপিংকে স্বৈরশাসক আখ্যা দিয়ে করা নিজের মন্তব্যে অটল রয়েছেন মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট। গতকাল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ভারতের সফররত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। সে সময় তিনি বলেন, চীন সম্পর্কে তার কাঠখোট্টা বক্তব্য ‘এমন কিছু নয় যা আমি খুব বেশি পরিবর্তন করতে যাচ্ছি’। তিনি আরো বলেন, ‘আমি আশা করি ভবিষ্যতে কোনো না কোনো সময় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আমার দেখা হবে। এবং আমি মনে করি না এর (স্বৈরশাসক মন্তব্যের) কোনো বাস্তব পরিণতি থাকবে।’ কয়েকদিন আগে ক্যালিফোর্নিয়ায় তহবিল সংগ্রহের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাইডেন বলেন, চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে সন্দেহজনক চীনা গুপ্তচর বেলুন শনাক্ত হওয়ার পর অত্যন্ত বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন শি জিনপিং। এই বিষয়ে বাইডেন বলেন, ‘শি জিনপিং অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছিলেন। কারণ আমি গুপ্তচর সরঞ্জামে ভরা সেই বেলুনটিকে দুটি বক্স গাড়ি দিয়ে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করেছিলাম। আর সে সময় তিনি জানতেন না, বেলুনটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে আছে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘স্বৈরশাসকদের জন্য এটা বেশ বিব্রতকর। তারা জানেন না কী ঘটছে। বেলুনটিকে যেখানে পাওয়া গেছে, সেখানে সেটির যাওয়ার কথা ছিল না।’ বেইজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন দেখা করার একদিন পর জো বাইডেন ওই মন্তব্য করেন। মূলত জিনপিং-ব্লিংকেন বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈশ্বিক এই দুই পরাশক্তি দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানো। সংবাদমাধ্যম বলছে, অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং শি জিনপিং গত সোমবার তাদের বৈঠকে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে স্থিতিশীল রাখতে সম্মত হয়েছেন যাতে এটি সংঘর্ষের দিকে না যায়। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চীনে এই বিরল সফরের সময় কোনো বড় অগ্রগতি করতে ব্যর্থ হয় উভয়পক্ষ। অবশ্য সামনের দিনগুলোতে মার্কিন কর্মকর্তাদের আরো সফরের সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে উভয় দেশ। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে নিযুক্ত চীনের দূতাবাস বলেছে, তারা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মন্তব্যের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং দেশের শীর্ষ নেতা সম্পর্কে সর্বশেষ এই দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের কারণে (সম্পর্ক উন্নয়নে) যুক্তরাষ্ট্রের আন্তরিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।’ এতে আরো বলা হয়েছে, ‘চীনা সরকার এবং জনগণ চীনের শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের রাজনৈতিক উস্কানি মেনে নেবে না এবং দৃঢ়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।’ এর আগে চীনা রাষ্ট্রদূত জি ফেং বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন যা বলেছেন তার ‘নেতিবাচক প্রভাব পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে তাদের আন্তরিক পদক্ষেপ নেয়া উচিত’ আর তা না হলে ‘পরিণতি ভোগ করতে হবে’।