প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি ও ধসের কারণে মঙ্গলবার উত্তর ভারতে আরও অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
হিমাচল প্রদেশে মঙ্গলবার মৃত্যুর সংখ্যা ৩১-এ গিয়ে ঠেকেছে। এই প্রদেশেই বর্ষা শুরু পর থেকে মোট ৮০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, পাশের উত্তরাখণ্ডে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব ও রাজস্থানে একজন করে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
গত চার দিন ধরে উত্তর ভারতজুড়ে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে হিমাচল প্রদেশ ছাড়াও দিল্লি, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থানে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যে হিমাচল প্রদেশের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। সেখানে পাহাড় ধস, সড়কে ভাঙন ও সেতু ভেসে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে।
হিমাচলের মান্ডি, উনা, হামিরপুর, বিলাসপুর, চম্বা, কাংড়া এবং কুলু, সিরমুর, কিন্নৌর, শিমলা এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ রাজ্যের নদীগুলোর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। ইরাবরতী, বিতস্তা, শতদ্রু এবং চন্দ্রভাগা নদী ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সোলান উপত্যকায় রোববার ৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বৃষ্টি। ১৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে সোলানে।
হিমাচলের আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, গত ১ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২৪৯.৬ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের তুলনায় ২২৬ শতাংশ বেশি। কিন্নৌরে ৫০০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সোলানে ৪২৬ শতাংশ, সিরমুরে ৩৬৭ শতাংশ, শিমলায় ৩৬০ শতাংশ, বিলাসপুরে ৩২৫ শতাংশ, লাহুল এবং স্পিতিতে ২৩৩ শতাংশ, মান্ডিতে ১৩০ শতাংশ। দুর্যোগের কারণে হিমাচলের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে রয়েছে ৩০০ পর্যটক। রাজ্যের ৪১টি জায়গায় ধস এবং একটি জায়গায় মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া অফিস ২৪টি রাজ্যে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব এবং দিল্লিতে। বৃষ্টির পরিমাণ সামান্য কমবে হিমাচলে। তবে বৃষ্টি পরিমাণ বাড়বে উত্তরাখণ্ড, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে। দিল্লিতে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। পানির স্তর ২০৫ মিটার ছাড়িয়ে গেছে। হরিয়ানার হাতিকুণ্ড বাঁধ থেকে পানি ছাড়ায় দিল্লির নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। দিল্লিতে বৃষ্টি ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের।