ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

উত্তর কোরিয়ায় মার্কিন সেনার অনুপ্রবেশ

নিশ্চুপ পিয়ংইয়ং
উত্তর কোরিয়ায় মার্কিন সেনার অনুপ্রবেশ

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ায় অনুপ্রবেশ করেছেন এক মার্কিন সেনা। উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার সুরক্ষিত সীমান্ত অতিক্রম করে তিনি উত্তর কোরিয়ার সীমানায় পৌঁছেছেন। তবে এ বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। অনুমতি ছাড়াই দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করে উত্তর কোরিয়ায় অনুপ্রবেশ করায় ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে বলে জাতিসংঘ নিশ্চিত করেছে। কোরিয়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে, ২৩ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি একজন প্রাইভেট সেকেন্ড ক্লাস পদমর্যাদার মার্কিন সেনা সদস্য। তার নাম ট্র্যাভিস কিং।

টুইটারে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, আমরা ধারণা করছি তিনি বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার হেফাজতে আছেন এবং এই ঘটনার সমাধানে আমরা কোরিয়ান পিপলস আর্মির (কেপিএ) সঙ্গে কাজ করছি। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর বলছে যে, তারা তাদের সেনা আটকের ঘটনায় বেশ উদ্বিগ্ন এবং তারা এই পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ ও তদন্ত করছে। মার্কিন কর্মকর্তারা সিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন, ট্র্যাভিস কিং সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কারাগারে আটক ছিলেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল।

এজন্য এক সপ্তাহ আগে তাকে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনা ঘাঁটি ক্যাম্প হামফ্রেস থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার বিমানে ওঠেননি। দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেন বিমানবন্দরের কাস্টমস থেকেই হঠাৎ গায়েব হয়ে যান এই সেনা সদস্য। তিনি কোনোভাবে টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট সিকিউরিটি এরিয়ায় (জেএসএ) সীমান্ত সফরে যোগ দেন। ওই এলাকাটি বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ওই সফরের সময়ই সীমান্ত অতিক্রম করেন তিনি। এর পর থেকে তার সঙ্গে কারও কোনো যোগাযোগ হয়নি। কোরিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন বাহিনী ঘটনাটি তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন এক শীর্ষ মার্কিন কমান্ডার।

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে উত্তেজনার মধ্যেই এই সীমান্ত অতিক্রমের বিষয়টি সামনে এলো। কোরীয় উপদ্বীপে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বাড়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের জন্য এই ঘটনা সমস্যা তৈরি করতে পারে। উত্তর কোরিয়ার কারাগারে সাধারণত মার্কিন বন্দিদের সঙ্গে নৃশংস আচরণ করা হয়। ২০১৮ সালে, উত্তর কোরিয়া এক মার্কিন কলেজছাত্রকে মুক্তি দেয়। তিনি একটি হোটেল থেকে ব্যানার চুরির জন্য বন্দি হয়েছিলেন। তিনি কোমায় থাকা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন এবং পরে মারা যান। ১৯৯৬ সাল থেকে উত্তর কোরিয়া বেশ কয়েকবার মার্কিন নাগরিকদের আটক করেছে। তাদের মধ্যে পর্যটক, বিশেষজ্ঞ এবং সাংবাদিক ছিলেন।

২০১৭ সালের জুলাইয়ে মার্কিন সরকার তাদের নাগরিকদের উত্তর কোরিয়ায় যাওয়া নিষিদ্ধ করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সিবিএসকে বলেন, ওই সেনা কর্মকর্তা ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। এর পেছনে কারণ সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি। এক প্রত্যক্ষদর্শী ওই মার্কিন নাগরিকের সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনাটি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই ব্যক্তি তাদের ৪৩ জনের ট্যুর গ্রুপের একজন সদস্য ছিলেন। সীমান্তে পৌঁছতেই তিনি কিছু ভবনের মধ্যে দিয়ে উত্তর কোরিয়ার সীমান্তের দিকে দৌড়ে যান এবং জোরে হাসতে থাকেন। তিনি বলেন, আমি প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো রসিকতা করছেন। কিন্তু যখন তিনি আর ফিরে আসেননি, আমি বুঝতে পারলাম এটি নিছক কোনো রসিকতা ছিল না এবং তারপরে সবাই এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত