চীনের ‘নিখোঁজ’ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে বাড়ছে জল্পনা-কল্পনা

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিন গ্যাংকে দীর্ঘদিন জনসমক্ষে দেখা না যাওয়া নিয়ে অনলাইনে নানা ধরনের জল্পনা-কল্পনা দেখা যাচ্ছে। আর এটি আবারও চীনের সিক্রেসি বা গোপনীয়তাকে সামনে নিয়ে আসছে। ৫৭ বছর বয়সি এই নেতাকে গত ২৩ দিন ধরে জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছে না। তার সর্বশেষ আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি ছিল গত ২৫ জুন। গত ডিসেম্বরে মন্ত্রী মনোনীত হওয়ার সময় তাকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে মনে করা হচ্ছিল।

চীনা সরকারের সবচেয়ে পরিচিত মুখগুলোর একজন হিসেবে চিন গ্যাংয়ের দীর্ঘ অনুপস্থিতির ওপর শুধু কূটনীতিক বা চীন পর্যবেক্ষকরাই দৃষ্টি রাখছেন না বরং সাধারণ চীনা জনগণেরও দৃষ্টি আছে। গত সোমবার তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং জানান, এ সম্পর্কে তার কাছে দেওয়ার মতো কোনো তথ্য নেই। চীনের অস্বচ্ছ সিস্টেমের মধ্যে এ ধরনের হাই-প্রোফাইল একজন কর্মকর্তার এমন অন্তর্ধান একটি জটিলতার লক্ষণ হতে পারে। একই সঙ্গে মাও নিংয়ের জবাব এ বিষয়ে জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এবং এ বিষয়ে গভীর সন্দেহ তৈরি করেছে। চীনা সামাজিক মাধ্যম উয়েবোতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের ভিডিও ক্লিপে একজন মন্তব্য করেছেন, তিনি কি জানেন না যে কীভাবে জবাব দিতে হয়।

আরেকজন লিখেছেন, এই জবাব সম্পূর্ণ উদ্বেগজনক। চীনে কোনো ধরনের ব্যাখ্যা ছাড়াই উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের এমন হুটহাট নিখোঁজ হয়ে যাওয়া নতুন কিছু নয়। অনেক সময় পরে দেখা যায় তারা অপরাধ তদন্তের আওতায় রয়েছেন। আবার অনেক সময় তারা অন্তর্ধানে যান ও পরে ফিরে আসেন জনসমক্ষে। কিন্তু দৃশ্যপটের বাইরে থাকার কারণ সম্পর্কে তারা কিছু বলেন না। শি জিনপিং নিজেও ২০১২ সালে চীনের নেতা হওয়ার আগে প্রায় দুই সপ্তাহ জনসমক্ষে আসেননি। তখন তার স্বাস্থ্য এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের বিষয় আলোচনায় এসেছিল। তবে পার্টির উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে চিন গ্যাং একজন যিনি দীর্ঘসময় ধরে অনুপস্থিত।

গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে ইন্দোনেশিয়ায় কূটনীতিকদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন না। কিন্তু পরে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে এ লাইনটুকু সরিয়ে ফেলা হয়। চিনের পরিবর্তে তার পূর্বসূরি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিশনের পরিচালক ওয়াং ই সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফরেন পলিসি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলের বৈঠকও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এজন্যও কোনো কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি।

বোরেল বেইজিংয়ে পৌঁছানোর নির্ধারিত দিনের মাত্র দু’দিন আগে চীনের পক্ষ থেকে বৈঠক পেছানোর বিষয়টি জানানো হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে রয়টার্সকে। গত সোমবার চিন গ্যাংকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ফিলিপিন্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তের মধ্যকার বৈঠকেও দেখা যায়নি। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের ফুটেজে ওয়াং ইসহ মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তাদের এ সভায় দেখা গেছে।