ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নতুন উত্তেজনায় চীন-যুক্তরাষ্ট্র

নতুন উত্তেজনায় চীন-যুক্তরাষ্ট্র

মাইক্রোচিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনার মধ্যেই নতুন পদক্ষেপ নিলো বেইজিং। সম্প্রতি সেমিকন্ডাক্টর তৈরির প্রধান দুটি উপাদান রপ্তানির ওপর চীন যে বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছিল তা কার্যকর হতে যাচ্ছে। বেইজিং প্রশাসনের নতুন এই নীতি অনুসারে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশটি থেকে কোথাও গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়াম রপ্তানির জন্য বিশেষ লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে।

ইলেকট্রনিক্স ও কম্পিউটার চিপসহ সামরিক সরঞ্জামাদি উৎপাদনে এই দুটো উপাদান ব্যবহার করা হয়। মাইক্রোপ্রসেসর প্রযুক্তি শিল্পে চীন যেন খুব বেশি দূর অগ্রসর হতে না পারে সেজন্য এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। তারই অংশ হিসেবে চীনের কাছে সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। তারপরই চীন গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়াম রপ্তানির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে।

বিশ্বব্যাপী যতো গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়াম ব্যবহার করা হয় তার সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী দেশ চীন। জরুরি কাঁচামাল শিল্প সংক্রান্ত জোট ক্রিটিক্যালের ম্যাটেরিয়ালস অ্যালায়েন্স সিআরএমএ’র হিসেব অনুসারে সারাবিশ্বে ব্যবহৃত গ্যালিয়ামের ৮০ শতাংশ এবং জার্মেনিয়ামের ৬০ শতাংশ আসে চীন থেকে। গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়ামকে বলা হয়। মাইনর মেটাল প্রকৃতিতে এমনি এমনি পাওয়া যায় না। সাধারণত অন্যান্য প্রক্রিয়ার উপজাত হিসেবে এগুলো তৈরি হয়ে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি জাপান ও নেদারল্যান্ডসও চীনের কাছে চিপ প্রযুক্তি রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুতকারী বিশ্বের প্রধান একটি কোম্পানি এএসএমএল নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত। চীন থেকে এই ঘোষণা আসার সময়টা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়। কারণ এর আগে হল্যান্ডসহ আরো কয়েকটি দেশ চীনের কাছে চিপ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান বিএমও ক্যাপিটাল মার্কেটসের কলিন হ্যামিলটন। তিনি বলেন, বিষয়টা খুব সহজ। আপনি যদি আমাকে চিপ না দেন, তাহলে এসব চিপ তৈরিতে যেসব উপাদান লাগে, আমরাও সেগুলো আপনাদের দেব না। বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির এই দুটো দেশের মধ্যে ক্রমাগত এ ধরনের পাল্টা-পাল্টি পদক্ষেপের ফলে সম্পদের জাতীয়তাবাদীকরণ প্রবণতার বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

এই প্রবণতায় একটি দেশের সরকার আরেকটি দেশের ওপর প্রভাব বিস্তারের জন্য জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিজেদের কাছে মজুত করে রাখে। বার্মিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কেভিন হারপার বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে বিভিন্ন দেশের সরকার এখন বিশ্বায়নের ধারণা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তিনি গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিয়ে গবেষণা করেন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারগুলো এসব উপাদান সরবরাহ করবে এমন ধারণা এখন আর নেই। আর আপনি যদি এই চিত্রটাকে আরো বড় পরিসরে দেখেন তাহলে দেখবেন যে পশ্চিমা শিল্প কিছুটা হলেও তাদের অস্তিত্ব রক্ষার হুমকির মধ্যে পড়েছে। গ্যালিয়াম আর্সেনাইড একটি যৌগিক পদার্থ, যা গ্যালিয়াম ও আর্সেনিক দিয়ে তৈরি। হাই-ফ্রিকোয়েন্সি কম্পিউটার চিপ তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও লাইট এমিটিং ডায়োডস বা এলইডি লাইট এবং সোলার প্যানেল উৎপাদনেও এই পদার্থটি ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত