আরো কঠোর হচ্ছে ইরানের হিজাব আইন

প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

হিজাব আইন লঙ্ঘন করার অপরাধে গত বছরের সেপ্টেম্বরে মাহসা আমিনি নামের এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছিল ইরানের নৈতিকতা পুলিশ। এরপর পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আর কয়েক সপ্তাহ পর এ তরুণীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হবে।

আর আমিনীর মৃত্যুর ১ বছর পূর্তির সময় ঘনিয়ে আসার সময় হিজাব আইন আরো কঠিন করার চিন্তাভাবনা করছে ইরান। গত বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন। আইনটি এতটাই কঠিন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে যেটিতে আঁতকে উঠবেন অনেকে। হিজাব আইন লঙ্ঘনকারীদের আরো কঠোর শাস্তির বিধান রেখে এ সংক্রান্ত একটি নতুন খসড়া আইন প্রস্তুত করছে দেশটি।

৭০ ধারার খসড়া আইনটিতে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে যারা হিজাব পরিধানে অস্বীকৃতি জানাবেন তাদের আরো লম্বা সময়ের জেল দেওয়া হবে। যেসব তারকা ও ব্যবসায়ী এই আইন ভঙ্গ করবেন, তাদের আরো কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। এছাড়া খসড়া আইনে প্রস্তাব করা হয়েছে, যারা আইন ভঙ্গ করবে- আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স ব্যবহার করে তাদের শনাক্ত করা হবে এবং শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

কী শাস্তির বিধান আছে নতুন আইনে? ইরানে বর্তমানে যে হিজাব আইন আছে, সেটি যদি কেউ ভঙ্গ করেন, তাহলে তার ১০ দিন থেকে ২ মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে অথবা ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ ইরানি রিয়াল জরিমানা হতে পারে। যা বর্তমানে ১ দশমিক ১৮ থেকে ১১ দশমিক ৮২ মার্কিন ডলারের সমান। নতুন খসড়া আইনে এই শাস্তি অনেক বেশি কঠিন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কেউ হিজাব পরিধান বিধান লঙ্ঘন করলে পাঁচ থেকে ১০ বছরের জেল সঙ্গে ৩৬ কোটি ইরানি রিয়াল জরিমানা হতে পারে।

যা ৮ হাজার ডলারেও বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই খসড়া আইন ইঙ্গিত দিচ্ছে গত বছর হিজাববিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ হলেও, এই আইন কার্যকরে পিছপা হবে না দেশটির সরকার। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম মেহের জানিয়েছে, খসড়া আইনটি এ বছরের শুরুতে বিচার বিভাগ সরকারের কাছে প্রেরণ করেছিল। এরপর এটি পাঠানো হয় পার্লামেন্টে এবং পরবর্তী সময়ে আইন ও বিচার কমিশনে এটি গৃহীত হয়।

আজ রোববার আইনটি বোর্ড অব গভর্নরের কাছে পাঠানো হবে। এরপর যাবে পার্লামেন্টের ফ্লোরে। সংবাদমাধ্যটি আরো জানিয়েছে, পার্লামেন্ট আগামী ২ মাসের মধ্যে আইনটির ওপর ভোটাভুটির আয়োজন করবে। ইরানে হিজাব সংক্রান্ত ইস্যুর লম্বা ইতিহাস রয়েছে। ১৯৩৬ সালে রেজা শাহর শাসনামলে দেশটিতে হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে ১৯৪১ সালে দেশটির পরবর্তী সময়ে শাসক এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে শাহদের শাসনের পতন ঘটানো হয়। এরপর ১৯৮৩ সালে দেশটির হিজাব পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়।