পানি খুঁজতে চাঁদে রাশিয়ার অভিযান

প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

১৯৭৬ সালের পর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে লুনা-২৫ নামের একটি মহাকাশযান পাঠাল রাশিয়া। এই মহাকাশযান চাঁদের ওই প্রান্তে পানির খোঁজ করবে। রাশিয়ার আমুর অঞ্চলে অবস্থিত ভস্টকনি উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করা হয়। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি। খবরে বলা হয়েছে, মূলত চাঁদে মানব বসতি গড়ার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে উপগ্রহটিতে পানির সন্ধান চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। সেই দৌড়ে যোগ দিল রাশিয়া। মহাকাশযান লুনা-২৫ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পানির উৎসের সন্ধান করবে। রুশ মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান রসকসমস জানিয়েছে, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২১ আগস্ট লুনা-২৫ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে। যদি অবতরণ সফল হয় তবে তা ভারতীয় মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ এর দুই দিন আগেই চাঁদের মেরুতে অবতরণ করবে। অথচ চন্দ্রযান-৩ লুনা-২৫ এর সপ্তাহখানেক আগে পৃথিবী থেকে উৎক্ষিপ্ত হয়েছে। এর আগে চাঁদে পাঠানো সব মহাকাশযানই উপগ্রহটির নিরক্ষীয় রেখা বা এর আশপাশের অঞ্চলে অবতরণ করেছে। এই প্রথম কোনো যান উপগ্রহটির দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করতে যাচ্ছে। রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস জানিয়েছে, লুনা-২৫ মহাকাশযানটির চাঁদ পর্যন্ত পৌঁছাতে মূলত সময় লাগবে পাঁচ থেকে সাত দিন। তবে বাকি পাঁচ থেকে সাত দিন লুনা-২৫ চাঁদের কক্ষপথে অবস্থান করবে, যাতে করে অবতরণের জন্য সম্ভাব্য তিনটি স্থান ভালোভাবে যাচাই করতে পারে। রাশিয়া এমন এক সময়ে এই মহাকাশযান পাঠাল, যা ভারতের চন্দ্রযান-৩ পাঠানোর সময়ের কাছাকাছি। ২৩ অগস্ট এই মহাকাশযানের চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা রাখার কথা। সেই একই দিনে ভারতের চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার ও রোভারেরও চাঁদের মাটিতে পা রাখার কথা। রসকসমস জানিয়েছে, রাশিয়া ও ভারতের মহাকাশযান একই এলাকায় অবস্থান করলেও তারা পরস্পরের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। কারণ, উভয় মহাকাশযানই আলাদা আলাদাভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়ে পাঠানো হয়েছে। এক বিবৃতিতে রসকসমস বলেছে, ‘সেগুলোর পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষের কোনো আশঙ্কা নেই। চাঁদে সবার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে।’ রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, লুনা-২৫ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালাবে। মহাকাশযানটিতে এমন সব যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়েছে যেগুলো চাঁদের মাটি, প্লাজমা এবং ধুলো থেকে বিভিন্ন বিরল খনিজ এবং পানির উৎস সন্ধানে গবেষণা চালাবে। প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্যানুসারে, লুনা-২৫ চাঁদে অন্তত এক বছর অবস্থান করবে। উল্লেখ্য, আধুনিক রাশিয়া এই প্রথম কোনো মহাকাশযান পাঠাল। এই মহাকাশযানটি শতভাগ রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ উপাদান এবং প্রযুক্তিতে তৈরি। রাশিয়ার আগে এর উত্তরসূরি দেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত ২৪টি লুনার মিশন বা চাঁদে ২৪ বার মহাকাশযান পাঠিয়েছিল। এবড়োখেবড়ো পৃষ্ঠের কারণে দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযানগুলোর অবতরণ করা বেশ কঠিন। তবে বিজ্ঞানীদের অনুমান, চাঁদের এই অংশেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বরফ রয়েছে, যা থেকে জ্বালানি এবং অক্সিজেন পাওয়া সম্ভব হতে পারে। পাশাপাশি খাওয়ার পানিও পাওয়া যেতে পারে।