যুক্তরাষ্ট্রের দ্বীপ অঙ্গরাজ্য হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে ভয়াবহ দাবানলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকালে হাওয়াইয়ের গভর্নর যশ গ্রিন এই দাবানলকে ‘হাওয়াইয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ বলে অভিহিত করে দিনটিকে ‘হৃদয়বিদারক’ বলে বর্ণনা করেছেন। গ্রিন জানান, মাউই দ্বীপের পশ্চিম উপকূলীয় পর্যটন শহর লাহাইনার ৮০ শতাংশ ‘শেষ হয়ে গেছে’, প্রায় ১৭০০টি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঠিক কতজন নিখোঁজ রয়েছেন তার প্রকৃত সংখ্যা কর্তৃপক্ষের জানা নেই। তাদের হিসাব অনুযায়ী সংখ্যাটি প্রায় ১০০০ হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় লোকজনকে খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শত শত বাড়ি পুড়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন। এদের অধিকাংশই লাহাইনার বাসিন্দা। তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার জন্য ২০০০ ঘরের ব্যবস্থা করতে বলেছেন গভর্নর গ্রিন। পাশাপাশি সম্ভব হলে গৃহহীনদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বিবিসি জানিয়েছে, শহরজুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ার কয়েক ঘণ্টা পর উপকূলে অপেক্ষমাণ কিছু মানুষ প্রশান্ত মহাসাগরে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করতে বাধ্য হয়েছেন। মার্কিন কোস্ট গার্ড তাদের উদ্ধার করেছে। গত মঙ্গলবার রাতে মাউইতে দাবানল শুরু হয় আর পাশ দিয়ে যাওয়া হারিকেন ডোরার বাতাসের তোড়ে অল্প সময়ের মধ্যেই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। দাবানল এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি বলে দমকল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এলাকা ছেড়ে যাওয়া লোকজনকে সতর্ক করে তাদের এখনই বাড়িতে না ফিরতে বলা হয়েছে। দাবানলকবলিত এলাকাগুলোর পরিস্থিতি এখনো বিপজ্জনক ও অনিশ্চিত বলে জানিয়েছে তারা। এরইমধ্যে দ্বীপটি থেকে ১৪ হাজারেরও বেশি পর্যটককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মাউইর ১১ হাজার বাসিন্দা এখনো বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছেন। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মাউইর দাবানলকে ‘বড় ধরনের দুর্যোগ’ বলে ঘোষণা করেছেন। এর ফলে ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ও পুনর্নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল তহবিল দ্রুত পাওয়া সহজ হবে।
