ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কমেনি রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রসম্ভার

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কমেনি রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রসম্ভার

রাশিয়ার হাতে যেন বিদেশি সামরিক সরঞ্জাম পৌঁছতে না পারে, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ সরকার তাদের ভাষায় ‘সবচেয়ে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা’ ঘোষণা করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তুরস্ক, দুবাই, স্লোভাকিয়া এবং সুইজারল্যান্ডের কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে। ব্রিটেনের পররাষ্ট্রসচিব জেমস ক্লেভারলি বলেছেন, এ পদক্ষেপের ফলে রাশিয়ার অস্ত্রভাণ্ডার আরও সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে এবং পুতিনের বর্তমানে ধুঁকতে থাকা প্রতিরক্ষা খাতকে আবার চাঙা করে তুলতে যে সরবরাহ লাইন তৈরি হয়েছে, সেই জাল গুটিয়ে আনা সম্ভব হবে।

কিন্তু বিষয়টা হলো যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন একের পর এক বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরও রাশিয়া এখনও যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য প্রয়োজনীয় সামরিক যন্ত্রাংশ এবং রসদ সংগ্রহ করে যাচ্ছে। কীভাবে এটা ঘটছে তার ব্যাখ্যা জটিল। কিন্তু এর পেছনে রয়েছে পশ্চিমা প্রযুক্তি, বিশেষ করে মাইক্রোচিপের মত ক্ষুদ্র কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি হস্তগত করার ব্যাপারে রাশিয়ার দক্ষতায় কখনও ভাটা না পড়া। ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রসহ রাশিয়ার অস্ত্রসম্ভারের বেশিরভাগেই প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয় আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, জাপান, ইসরাইল এবং চীনে তৈরি ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ। কিয়েভের কেএসই ইনস্টিটিউট এবং রুশ নিষেধাজ্ঞাবিষয়ক আন্তর্জাতিক ওয়ার্কিং গ্রুপ ইয়েরমাক-ম্যাকফ্যল জুন মাসে জব্দ করা ৫৮টি রুশ অস্ত্র বিশ্লেষণ করে সেগুলোর মধ্যে ১,০৫৭টি পৃথক বিদেশি যন্ত্রাংশ দেখতে পেয়েছে। এসব যন্ত্রাংশের প্রায় অর্ধেকই মাইক্রোচিপ এবং প্রসেসর এবং সেগুলোর প্রায় তিন ভাগের দু’ভাগই আমেরিকান কোম্পানির তৈরি। শুধু তাই নয়, তালিকার শীর্ষ পাঁচটি কোম্পানির সবগুলোই আমেরিকান, যার মধ্যে রয়েছে অ্যানালগ ডিভাইসেস, টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্ট এবং ইন্টেল। এই গবেষকরা ফেব্রুয়ারি ২০২২ এ রাশিয়া ইউক্রেনে পুরো মাত্রায় যুদ্ধ শুরু করার সময় থেকে রুশ অস্ত্রশস্ত্রে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ এবং উপাদানগুলো খতিয়ে দেখেছেন এবং সেখান থেকেও একই তথ্য উদ্ঘাটন করেছেন।

এসব অতি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক যন্ত্রাংশগুলোর বেশিরভাগের ওপরই রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ থাকায় রাশিয়া কোনো পশ্চিমা সরবরাহ সংস্থার কাছ থেকে সরাসরি সেগুলো কিনছে না। পরিবর্তে রাশিয়া এখন তৃতীয় বেশ কিছু দেশের একটা বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এসব যন্ত্রাংশ কিনছে। যেমন, এবছর এপ্রিল মাসে নিকেই কোম্পানি জানতে পারে ৭৫ শতাংশ আমেরিকান মাইক্রোচিপ হংকং বা চীনের মাধ্যমে রাশিয়ায় সরবরাহ করা হচ্ছে। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর ছোট এবং মাঝারি সাইজের কিছু সরবরাহ সংস্থা গড়ে উঠেছে, যারা কখনও কখনও হংকংএ নাম ও পরিচয়বিহীন অফিস থেকে তাদের কার্যকলাপ চালিয়েছে। অন্যান্য গবেষণায় আরও দেখা গেছে, কার্যত অসামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য রাশিয়া এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কিনেছে, যেমন দেশটির মহাকাশ কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত