ভারি বৃষ্টিতে হিমাচল প্রদেশে ৭৪ মৃত্যু

প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

ভারতের হিমাচল প্রদেশে টানা তিন দিনের ভারি বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি অন্তত ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার উদ্ধারকর্মীরা ভূমিধসে বিধ্বস্ত শিমলার শিব মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ থেকে আরো একটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে, একই দিন চাম্বায় আরো দুইজন নিহত হয়েছেন। সামার হিলের এই শিব মন্দিরটিসহ শিমলায় বড় ধরনের তিনটি ভূমিধসে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বর্ষাকাল শুরু হওয়ার পর থেকে ৫৫ দিনে হিমাচল প্রদেশ রাজ্যে ১১৩টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এসব ভূমিধসে রাজ্যটির গণপূর্ত বিভাগের (পিডব্লিউডি) বিভিন্ন অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪৯১ কোটি রুপি। ভারতের জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের ক্ষতি ১০০০ কোটি রুপি। শিমলার সামার হিলে রেললাইনের নিচের মাটি পাহাড়ের ওপর থেকে নেমে আসা হড়কা বান ও কাদাপানির স্রোতে ভেসে গেছে, শুধু রেললাইনটি শূন্যে ঝুলে আছে। হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু জানিয়েছেন, এসব ভূমিধসে হওয়া অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি পুনর্নিমাণ ‘পর্বতসম চ্যালেঞ্জ’।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পরিবেশগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হিমালয়ে অবৈজ্ঞানিকভাবে নির্মাণযজ্ঞ চালানো হচ্ছে বলেই বারবার ভূমিধসের মতো ঘটনা ঘটছে। নির্মাণ কাজের জন্য পাহাড়ে বনের আচ্ছাদন ধ্বংস করা হচ্ছে এবং ঝর্নাধারার কাছে অবকাঠামো তৈরি করে পানির প্রবাহকে আটকে দেওয়া হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার শিমলা, সোলান, মানডি, চাম্বা ও সংলগ্ন এলাকাগুলোতে বজ্রসহ মাঝারি ধরনের আরো কিছু এলাকায় ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) জানিয়েছে। গত রোববার থেকে টানা তিন দিন হিমাচল প্রদেশে ভারি বৃষ্টি হয়। মঙ্গলবারের পর বৃষ্টি কমে আসে।

গত বৃহস্পতিবার রাজ্যটির কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে। ২৪ জুন থেকে হিমাচলে বর্ষাকাল শুরু হওয়ার পর থেকে প্রবল বৃষ্টিতে দেখা দেওয়া হড়কা বান, ভূমিধসের মতো বিভিন্ন ঘটনায় এ পর্যন্ত অন্তত ২১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ধ্বংসাত্মক বৃষ্টিপাতে হিমাচলে শুধু অবকাঠামোই ধ্বংস হয়নি কোথাও কোথাও পুরো পরিবার শেষ হয়ে গেছে। শিমাল মন্দিরের ভূমিধসে এক পরিবারের তিন প্রজন্মের সাত সদস্যের সবাই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছেন। শিব মন্দিরটি যখন ভূমিধসের ধাক্কায় ধসে পড়ে তখন তিনটি শিশুসহ ওই পরিবারের সাত সদস্যই ভেতরে ছিলেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পরিবারটির নিহতদের একজন পবন; তার ভাই বিনোদ বলেন, ‘আমার ভাই, তিন সন্তান, ভাবি, আমাদের কন্যাদের একজনসহ আরো পাঁচজন চলে গেছে। উদ্ধারকারীরা তাদের মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে।’ বহু হতাহত হওয়ার পাশাপাশি রাজ্যটির কয়েক হাজার মানুষ তাদের জীবিকা হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। সরকারি হিসাবে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০ হাজার কোটি রুপির মতো হবে বলা হয়েছে।