ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কারাবন্দিদের হাতে জিম্মি ইকুয়েডরের নিরাপত্তা বাহিনীর ৫৭ সদস্য

কারাবন্দিদের হাতে জিম্মি ইকুয়েডরের নিরাপত্তা বাহিনীর ৫৭ সদস্য

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের কুয়েনকা শহরের কারাগারের ভেতর ৫০ কারারক্ষী ও ৭ পুলিশ সদস্যকে জিম্মি করেছে কারাবন্দিরা। এসব কারাবন্দি মূলত সংঘটিত গ্যাংয়ের সদস্য। ইকুয়েডরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুয়ান জাপাতা গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কারাগারের ভেতর আটক গ্যাং সদস্যদের কাছে থাকা অস্ত্র ও অন্যান্য অবৈধ জিনিসপত্র উদ্ধারে কয়েকদিন ধরে অভিযান চালাচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এমন সময়ই কারারক্ষীদের জিম্মি করার ঘটনা ঘটল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুয়ান জাপাতা বলেছেন, ‘আমরা আমাদের কর্মকর্তাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন।’

কারাগারে এমন অভিযান চলার সময় কুইতো শহরে দুটি গাড়ি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ধারণা করা হচ্ছে— অভিযানের বদলা নিতে গ্যাংয়ের সদস্যরা এ বোমা হামলা চালিয়েছে। গাড়ি বোমা হামলার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসসো বলেছেন, ‘বিভিন্ন হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড চলছে। গত রাতে কুইতোতে দুটি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। পরিষ্কারভাবে এটি আমাদের অভিযানের বদলা নিতে করা হয়েছে। কারাগারে আইন প্রতিষ্ঠার চেষ্টার কারণে, এসব ভয় দেখানো কর্মকাণ্ড (চালানো হচ্ছে)।’ স্থানীয় সাংবাদিক ক্রিস্টিয়ান সাঞ্চেজ মেন্দিয়েতা জানিয়েছেন, কারাবন্দিরা বৃহস্পতিবার কারাগারের ছাদে ওঠে পড়তে সমর্থ হয়। কী কারণে এ জিম্মির ঘটনা ঘটল? ইকুয়েডরের মাদক চোরাকারবারী গ্যাংগুলো দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার দখল নিয়ে লড়াই চালাচ্ছে। আর ক্ষমতা দেখানোর জন্য গ্যাংগুলো কারাগারে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। লাতাকুঙ্গা, কুয়েনকা এবং আজোগুস কারাগারের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে অপরাধী গ্যাং লস লাবোসের দখলে। এই লস লাবোস ও অন্যান্য গ্যাংগুলোর মধ্যে সংঘর্ষে ২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ইকুয়েডরে কারাগারের ভেতর ৪৩০ জন নিহত হয়েছেন।

কারাগারের ভেতর গ্যাংদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসতে গত ২৪ এপ্রিল ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লাসসো কারা ব্যবস্থায় ৬০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেন। এরমাধ্যমে কারাগারের ভেতর ক্লিনআপ অপারেশন চালাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কয়েকশ সদস্যকে মোতায়েন করা হয়। এই ক্লিনআপ অপারেশনে অবৈধ অস্ত্র, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, বিস্ফোরক, মদ ও নগদ অর্থ উদ্ধার করেন তারা। তবে যখন কুয়েনকা কারাগারে এ অভিযান চালানো শুরু হয় তখন সেখানে গ্যাং সদস্যরা উগ্র হয়ে ওঠেন। যদিও কারা কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে জানায়, কুয়েকনার বন্দিদের অন্যত্র স্থানান্তরের পরিকল্পনা করায় তারা এমন বিদ্রোহ শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, কুয়েনকা কারাগারের ভেতর জিম্মি কারারক্ষী ও পুলিশ সদস্যরা তাদের জীবন বাঁচাতে সরকারের প্রতি আবেদন করেছেন। বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গত বুধবার থেকে কুয়েকনা কারাগারের বাইরের সেনাবাহিনীর ৪০০ ও পুলিশের ২০০ সদস্য অবস্থান নিয়ে আছেন। কিন্তু তারা ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত