অত্যাধুনিক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করল রাশিয়া

প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

পারমাণবিক অস্ত্রবাহী অত্যাধুনিক সারমাত ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেছে রাশিয়া। প্রয়োজনে যেকোনো সময় ব্যবহার করা হবে। রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। রাশিয়ার যেকোনো স্থান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র। ২০২২ সালের এপ্রিলের শেষ দিকে ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষা চালানো হয়। সে সময় ক্ষেপণাস্ত্রটিকে রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্লেসেৎস্ক থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। পরে এটি প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার দূরবর্তী রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলের কামচাটকা উপদ্বীপে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। সারমাত সিরিজের এই আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতে ১০টি বা তার চেয়েও বেশি পারমাণবিক অস্ত্র যুক্ত করা সম্ভব। রসকসমসের প্রধান ইউরি বরিসভ গত শুক্রবার জানিয়েছেন, সারমাত ক্ষেপণাস্ত্র ‘যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত’ রাখা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘সারমাত কৌশলগত ব্যবস্থাটিকে যুদ্ধের জন্য সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।’ তবে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কোথায় মোতায়েন করা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি ইউরি বরিসভ। সারমাত ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, এই কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে শত্রুরা আমাদের ব্যাপারে দ্বিতীয়বার ভাবতে বাধ্য হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আরএস-২৮ নামে সারমাত ক্ষেপণাস্ত্র একই সঙ্গে ১০টি বা তারও অধিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম এবং এসব ওয়ারহেডের প্রতিটি আলাদা আলাদাভাবে কাজ করতে পারে। পাশাপাশি এটি বিশ্বের যেকোনো, এমনকি উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরুর যেকোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ন্যাটো ও পশ্চিমা বিশ্বের কাছে এই ক্ষেপণাস্ত্র স্যাটান বা শয়তান নামে পরিচিত। পশ্চিমা বিশ্বের ধারণা, সারমাত একটানা ১৮ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে সক্ষম। এটি এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। সারমাত সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই কাজ করে আসছে রাশিয়া। ফলে এই পরীক্ষা হয়তো রাশিয়ার প্রতিপক্ষ দেশগুলোর জন্য নতুন কোনো সংবাদ নয়। তবে, এই পরীক্ষা যে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার চলমান সংকট আরও গভীর করবে এবং ইউক্রেনের মিত্রদের নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত বিশ্লেষকরা। নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কে পুতিন বলেছেন, ‘নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্র সর্বোচ্চ কৌশলগত ও প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এবং এতে ক্ষেপণাস্ত্রবিরোধী প্রতিরক্ষার সব আধুনিক কৌশলকে অতিক্রম করতে সক্ষম। বিশ্বে এটির কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই এবং দীর্ঘ সময় এর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবেও না।’ পুতিন আরো বলেন, ‘এই অনন্য অস্ত্রটি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধের সম্ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করবে। বাহ্যিক হুমকি থেকে রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং যারা আক্রমণাত্মক বক্তব্যের মাধ্যমে আমাদের দেশকে হুমকি দেয়ার চেষ্টা করে, তাদের জন্য চিন্তার নতুন খোরাক জোগাবে।’