ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

২৩ বছরে ১ লাখ ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনিকে বন্দি করেছে ইসরাইল

২৩ বছরে ১ লাখ ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনিকে বন্দি করেছে ইসরাইল

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের গত ২৩ বছরে অন্তত ১ লাখ ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনিকে বন্দি করেছে ইসরাইল। প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) সহযোগী প্রতিষ্ঠান কমিশন ফর প্রিজনার্স অ্যাফেয়ার্স গত বৃহস্পতিবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে। তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ২০০০ সালে ইসরাইলি রাজনীতিবিদ ও তৎকালীন বিরোধী নেতা অ্যারিয়েল শ্যারন ইসরাইলি আইনপ্রণেতাদের একটি দলকে নিয়ে জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের পাশে টেম্পল মাউন্ট পরিদর্শন করতে যান। ফিলিস্তিনিরা তখন প্রতিবাদ করে এবং সেই প্রতিবাদ দ্রুতই সহিংস হয়ে ওঠে। পরে সেই প্রতিবাদ থেকেই দানা বাঁধে দ্বিতীয় ফিলিস্তিনি বিদ্রোহের বা দ্বিতীয় ইন্তিফাদার, যা আল-আকসা ইন্তিফাদা নামেও পরিচিত। একুশ শতকের শুরুর বছর, অর্থাৎ ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখে শুরু হয়ে ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় ইন্তিফাদা চলেছিল ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। দীর্ঘ এই সাড়ে চার বছরে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে অন্তত ৪ হাজার ৪১২ জন নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছে আরো অন্তত ৪৯ হাজার জন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ছিল সেই দ্বিতীয় ইন্তিফাদার ২৩তম বার্ষিক। দ্বিতীয় ইন্তিফাদার ২৩ বছরকে কেন্দ্র করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে কমিশন ফর প্রিজনার্স অ্যাফেয়ার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ২৩ বছরে ইসরাইলিরা অন্তত ১ লাখ ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনিকে বন্দি করেছে। এই বন্দিদের মধ্যে ২১ হাজারই শিশু। এছাড়া ফিলিস্তিনের বিগত পার্লামেন্টের অর্ধেক সদস্যকেও বন্দি করেছে ইসরাইল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাধারণ ফিলিস্তিনি ছাড়াও বিপুলসংখ্যক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, মন্ত্রী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী রয়েছেন। প্রতিবেদন অনুসারে, বন্দীদের মধ্যে অন্তত ২ হাজার ৬০০ জন নারী। তাদের মধ্যে অন্তত চারজন নারীকে গর্ভাবস্থায় বন্দী করে নিয়ে যায় ইসরাইল। পরে কারাগারেই জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই তিনি সন্তান জন্ম দেন। কমিশন ফর প্রিজনার্স অ্যাফেয়ার্স উল্লেখ করেছে, ইসরাইল ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশনের’ নামে বিনা অভিযোগে অন্তত ৩২ হাজার জনকে বন্দী করে রেখেছে। কেবল এই ৩২ হাজার ব্যক্তি ভবিষ্যতে কোনো অপরাধ করতে পারে এমন সন্দেহ থেকে ইসরাইলি বাহিনী তাদের আটক করেছে। এই ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশনের’ কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ চাইলে কোনো ব্যক্তি আরো নির্দিষ্ট করে বললে কোনো ফিলিস্তিনি বা আরবকে বিনা বিচারে, বিনা অপরাধে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য গ্রেপ্তার করে রাখতে পারে। এই দীর্ঘ ২৩ বছরে ইসরাইলিদের নির্যাতন ও ইচ্ছাকৃতভাবে চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার কারণে ১১৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। সর্বশেষ তথ্য বলছে, এখনো ইসরাইলের বিভিন্ন কারাগারে অন্তত ৫ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৮ জন নারী, ১৭০ জন শিশু। এদের মধ্যে ১ হাজার ২০০ জনই বন্দি রয়েছে ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশনের’ নামে বিনা অভিযোগে ও বিনা বিচারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত