ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভেঙে যেতে পারে মিয়ানমার!

ভেঙে যেতে পারে মিয়ানমার!

মিয়ানমারের শান রাজ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধ সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পুরো দেশই ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হবে। দেশটির সামরিক জান্তা সরকারের প্রেসিডেন্ট এ মন্তব্য করেছেন। মিয়ানমারে ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পর নিয়োগ পাওয়া সাবেক জেনারেল মিন্ত সোয়ে ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিলের এক জরুরি বৈঠকে বিদ্রোহীদের কয়েকটি সমন্বিত হামলার তথ্য তুলে ধরেন। ওই হামলায় সামরিক বাহিনী বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানান তিনি। শান রাজ্যের তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী, যাদের আরো অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সমর্থন দিয়েছে, তারা সরকারের বিরোধিতা করে আসছে। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা জান্তা সরকারের বেশ কয়েকটি সামরিক চৌকি, সীমান্ত পারাপার এবং রাস্তা দখল করে নিয়েছে। এই সীমান্ত পারাপার এবং রাস্তা ব্যবহার করে চীনের সঙ্গে স্থল বাণিজ্যের বেশিরভাগ পরিচালিত হতো। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জান্তা সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটাই তাদের জন্য সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ। প্রায় আড়াই বছরের লড়াই শেষে এখন মনে হচ্ছে যে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিদ্রোহীদের তৎপরতার জবাবে জান্তা সরকার শত শত বিমান হামলা করেছে এবং কামান থেকে গোলা ছুড়েছে। যার কারণে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তবে এরপরও যে ভূখণ্ডের দখল তারা হারিয়েছে, তা আবার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি। উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে এই লড়াইয়ে যে শত শত সৈন্য নিহত হয়েছে তাদের মধ্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং কিয়াও লিউইও রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভ্যুত্থানের পর থেকে নিহত হওয়া সেনাদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা। এই হামলার আরো তাৎপর্যপূর্ণ দিকটি হলো, প্রথমবারের মতো শান রাজ্যে পরিচালিত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো নিজেদের এবং তাদের সামরিক অভিযানগুলোকে সরকারের বিরুদ্ধে দারুণভাবে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছে। যাদের প্রধান লক্ষ্য হলো জান্তা সরকারকে হটিয়ে একটি গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চালু করা। এখানে আরো বিভিন্ন বিষয় কাজ করছে। এই তিনটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী দীর্ঘ দিন ধরেই তাদের দখলে থাকা ভূখণ্ডের সীমা বাড়াতে চেয়েছিল। চীন-মিয়ানমার সীমান্তে তৎপরতা চালানো এসব বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ওপর চীনের প্রভাব রয়েছে। কিন্তু বিদ্রোহীরা যেভাবে তাদের তৎপরতা বাড়িয়েছে, তাতে চীন কোনো বাধা দেয়নি। এর কারণ হয়তো শান রাজ্য যেভাবে অনলাইন স্ক্যামিং সেন্টারের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এবং সে বিষয়ে জান্তা সরকারের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার জন্য চীন মিয়ানমারের ওপর হতাশ। এসব স্ক্যামিং সেন্টারগুলোতে হাজার হাজার চীনের নাগরিকসহ আরো বিদেশি নাগরিকদের জোর করে কাজ করতে বাধ্য করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত