১৯৮০’র দশকে ড্রাগ মাফিয়া পাবলো এসকোবার বেআইনিভাবে একদল জলহস্তীকে কলম্বিয়ায় নিয়ে আসে। পরে এগুলো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বংশবৃদ্ধি শুরু করে। বর্তমানে দেশে জলহস্তীর সংখ্যা শতাধিক। এভাবে চলতে থাকলে ২০৩৫ সালের মধ্যে জলহস্তীর সংখ্যা ১ হাজার ছুঁয়ে যেতে পারে। তাই কলম্বিয়া সরকার এটির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বন্ধ্যত্বকরণের পরিকল্পনা করছে। জলহস্তী এসকোবারের চিড়িয়াখানা থেকে আশপাশের নদীগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে তারা বিকাশ লাভ করেছিল। বর্তমান এটি দেশটিতে ঝামেলা বাড়িয়েছে। কলম্বিয়ার কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যে দুটি পুরুষ জলহস্তী এবং একটি নারী জলহস্তীকে অস্ত্রোপচার করে বন্ধ্যত্ব করা হয়েছে। সরকার প্রতি বছর ৪০টি জলহস্তীকে বন্ধ্যা করাসহ অন্য জলহস্তী বিভিন্ন দেশে স্থানান্তরিত করার এবং কিছু প্রাণীকে ইউথেনাইজ করার পরিকল্পনা করেছে। কলম্বিয়া হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণও কম আকর্ষণীয় নয়। বলা হচ্ছে যে কলম্বিয়া এমন একটি দেশ যেখানে জলহস্তী প্রাণীর কোনো প্রাকৃতিক শিকারি নেই, যার কারণে তাদের জনসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পরিস্থিতি যেমন দাঁড়ায়, জলহস্তীকে দেশে একটি আক্রমণাত্মক প্রজাতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যা বাস্তুতন্ত্রকে বিরক্ত করতে পারে। পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকা পরিবেশ অফিসের প্রধান ডেভিড এচেভেরি লোপেজ বলেছেন, বন্ধ্যত্বকরণে সময় লাগে কারণ এই আক্রমণাত্মক তিন টন প্রাণীদের শনাক্ত করা এবং ধরা একটি কঠিন কাজ। এছাড়া সেখানে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে, যা আরো জটিলতা সৃষ্টি করেছে। বৃষ্টির কারণে ঘাস ও গাছপালার বাড়ছে, তাই এটাও বলা হয়েছে যে, বেশি ঘাস মানেই তাদের খাবারের জোগান বেশি, তাই তাদের ধরতে টোপ দিয়ে কোনো লাভ হবে না। ১৯৮০’র দশকে একদল জলহস্তীকে এসকোবারের ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানা, হ্যাসিন্ডা নেপোলেসে আনা হয়েছিল, যা ১৯৯৩ সালে তার মৃত্যুর পর পর্যটকদের আকর্ষণে পরিণত হয়েছিল। বেশিরভাগ প্রাণী নদীতে অবাধে বাস করে এবং কোনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বংশবৃদ্ধি করে। সরকার অনুমান কলম্বিয়ায় ১৬৯ জলহস্তী আছে। যদি তাদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে ২০৩৫ সাল নাগাদ তাদের সংখ্যা ১ হাজার ছুঁয়ে যেতে পারে।
তাই সরকারের এমন সিদ্ধান্তগ্রহণ। এদিকে যেহেতু কলম্বিয়ার মতো দেশে প্রথমবারের মতো এমন একটি প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে, তাই পুরো দেশের চোখ তাদের সরকারের দিকে। দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রতিটি বন্ধ্যাত্বকরণের খরচ প্রায় ৯ হাজার ৮০০ ডলার, এবং পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল এবং এটি পোষা প্রাণীর পাশাপাশি পশু স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রাণহানির কারণ হতে পারে।
