যৌন নিপীড়নে যে রায়ের প্রথা ভেঙেছে জাপান!

প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

নারী সহকর্মীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে জাপানের সাবেক তিন সেনাকে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। মনে করা হচ্ছে- এই রায়ের মাধ্যমে জাপানের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর যৌন নিপীড়ন নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা না করার প্রথাকে ভাঙা হয়েছে। গত মঙ্গলবার ফুকুশিমার একটি আদালত রায়ে অভিযুক্তদের দুই বছরের বহিষ্কারাদেশ দেন। অভিযুক্ত সাবেক তিন সেনা হলেন- শুতারো শিবুয়া, আকিতো সেকিন ও ইয়োসুকে কিমেজাওয়া। খবর বিবিসির।

২৪ বছর বয়সি রিনা গনোই নামে ওই নারী সেনা ২০২২ সালে ইউটিউবে তার গল্পটি প্রকাশ করলে তা আন্তর্জাতিকভাবে নজর কাড়ে। পরে ফুকুশিমার প্রসিকিউটররা তাদের আগের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে দিয়ে গেল মার্চ মাসে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। জাপানের সমাজ গভীর রক্ষণশীল, যেখানে যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলা এক ধরনের ট্যাবু। কয়েক মাস আগে যৌন অপরাধ-সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে জাপান। এর মধ্যে ধর্ষণের সংজ্ঞা পুনর্নির্ধারণ এবং সম্মতির বয়স বাড়ানোর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল। আইন সংশোধনের পর জাপানে যৌন নিপীড়নের বিষয়ে এটিই প্রথম বড় কোনো রায়। গোনোই জানান, তিনি ২০২০ সালে জাপানের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এরপর থেকে তাকে নিয়মিত নিপীড়নের শিকার হতে হতো। তিনি বলেন, ‘হলরুমে হেঁটে চলার সময় আমার পেছনে চড় মারা হতো। পেছন থেকে টেনে ধরা হতো। শুধু তাই নয়, আমার গালে চুমু দিত।’ এরপর ২০২১ সালে একটি মহড়া চলার সময় সাজাপ্রাপ্ত তিন সেনা তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। ওই সময় তার দুই পা দুই দিকে টেনে ধরা হয়। তখন অনেকেই তা দেখে হেসেছিলেন। এ ঘটনাটির বিষয়ে গোনোই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযোগের বিচার না পেয়ে সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে দেন গোনোই। গোনোইয়ের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সেনারা। গনোই বিবিসির ২০২৩ সালের অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী ১০০ নারীর একজন। তিনি টাইমের হানড্রেড নেক্সটের ১০০ এর মধ্যেও স্থান পেয়েছেন।