যুদ্ধে অন্যতম প্রাণঘাতী রাত দেখল গাজা

প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে ১১ সপ্তাহ ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যে অন্যতম প্রাণঘাতী রাত পার করেছে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড। খ্রিষ্টীয় বড়দিনের আগের রাতটিতে সেখানে বিমান হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। যিশুর জন্মস্থানের ‘পবিত্র ভূমিতে’ এসব রক্তপাতে প্রবল খোদ প্রকাশ করেছেন রোমান ক্যাথলিক গির্জার প্রধান পোপ ফ্রান্সিস। মধ্যরাতের কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে ইসরাইলি হামলা শুরু হয়ে গতকাল খ্রিষ্টীয় বড়দিন পর্যন্ত অব্যাহত ছিল- জানিয়েছে রয়টার্স। স্থানীয় বাসিন্দা ও ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে, গাজার মধ্যাঞ্চলীয় আল-বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে ইসরাইল ব্যাপক বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা জানিয়েছেন, মাঘাজি শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলের বিমান হামলায় অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ইসরাইল জানিয়েছে, তারা মাঘাজির ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা করে দেখছে। পাশাপাশি বেসামরিকদের ক্ষতি যতোটা কমনো যায় তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। হামাসের যোদ্ধারা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে অভিযান চালাচ্ছে এবং বেসামরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, ইসরাইল এমন অভিযোগ করলেও হামাস তা প্রত্যাখ্যান করেছে। ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, ইসরাইলি যুদ্ধবিমানগুলো গাজার মধ্যাঞ্চলের প্রধান সড়কগুলোতে বোমাবর্ষণ করেছে, এতে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি যানবাহনের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। তারা ইসরাইলি বোমা ও গোলায় আহতদের হাসপাতালগুলোতে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও ফুজেট প্রকাশ করেছে। চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন, রাতে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসেও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল আর তাতে আটজন নিহত হয়েছে। যাজক ও পাদ্রীরা ইসরাইল অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে যিশুর জন্মস্থান বেথেলহেমে বড়দিনের উৎসব বাতিল করেছেন। ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্বাস করা হয়, ২ হাজার বছর আগে এই শহরের একটি আস্তাবলে যিশুর জন্ম হয়েছিল। রোমের সেইন্ট পিটার ব্যাসিলিকায় বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় প্রার্থনা সভা পরিচালনার সময় পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘আজ রাতে আমাদের মন বেথেলহেমে, যেখানে শান্তির রাজপুত্র যুদ্ধের নিরর্থক যুক্তি, অস্ত্রের সংঘাত দ্বারা আরেকবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। এমনকি এগুলো আজো বিশ্বে তাকে কোনো জায়গা খুঁজে পেতে দিচ্ছে না।’ এর আগে ফিলিস্তিনি খ্রিষ্টানরা বেথেলহেমে জ্বলন্ত মোমবাতি হাতে নিয়ে নিশিযাপন, ত্রোস্ত পাঠ ও গাজার শান্তির জন্য প্রার্থনা করেন; কিন্তু সচরাচর যে উদযাপন করেন তা থেকে বিরত ছিলেন। সাধারণত একটি বড় গাছকে (ক্রিসমাস ট্রি) কেন্দ্র করে বেথেলহেমে বড়দিনের উৎসব পালিত হয়, কিন্তু এবার সে ধরনের কিছু ছিল না। তার বদলে নেটিভিটি গির্জার প্রস্তরমূর্তিগুলোর পাশে ভবনগুলোর কিছু ভাঙা অংশ ও সেগুলোকে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রেখে গাজাবাসীর প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন ফিলিস্তিনি খ্রিষ্টানরা।