ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পাপুয়া নিউগিনিতে দাঙ্গায় নিহত ১৫

পাপুয়া নিউগিনিতে দাঙ্গায় নিহত ১৫

পাপুয়া নিউ গিনির রাজধানী পোর্ট মোরসবিতে ব্যাপক দাঙ্গা ও অস্থিরতায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছে। আরেক শহর লে-তে নিহত হয়েছে আরো সাতজন। বেতন নিয়ে অসন্তোষে পুলিশ ধর্মঘট শুরু হওয়ার পর শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে এসে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও লুটপাট শুরু করে। তারা সুপার মার্কেটগুলো লুট করে আর দোকান ও গাড়িগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পোর্ট মোরসবি জেলার গভর্নর পউস পার্কোপ রেডিওতে করা এক মন্তব্যে বলেছেন, লুটপাট করছে ‘সুযোগসন্ধানীরা’। পাপুয়া নিউ গিনির (পিএনজি) সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে, জানিয়েছে বিবিসি। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লে-তে সহিংসতার বিস্তৃতি পরিষ্কার হয়নি। রেডিওতে দেওয়া ভাষণে পার্কোপ বলেছেন, ‘আমরা আমাদের দেশে নজিরবিহীন দাঙ্গা দেখছি, এর আগে আমাদের দেশ ও শহরের ইতিহাসে এ ধরনের কোনো কিছুই ঘটেনি।’ ‘দুঃখজনকভাবে আজ কিছু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, ‘তিনি এমনটি বললেও কতোজন মারা গেছে তা উল্লেখ করেননি। তাদের বেতন ৫০ শতাংশের মতো হ্রাস পেয়েছে, পুলিশ ও সরকারি কর্মচারীরা এমনটি জানার পর অস্থিরতা শুরু হয়। গত বুধবার তারা পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হয়ে এর প্রতিবাদ করে। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে পিএনজির প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপে জানিয়েছেন, কম্পিউটারে ত্রুটির কারণে সরকারি কর্মচারীদের বেতনের চেক থেকে প্রায় ১০০ ডলারের মতো কাটা পড়ে, সরকার কর বৃদ্ধি করেনি প্রতিবাদকারীরা যেমনটি অভিযোগ করেছেন। ‘সামাজিক মাধ্যমে এমন ভুল তথ্য ছড়িয়েছে, গুজব’ বলেছেন তিনি। পুলিশ রাস্তা থেকে সরে যাওয়ায় লোকজন তার সুযোগ নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ‘পুলিশ গতকাল কাজ করেনি। আর লোকজন তার সুযোগ নিয়ে অনাচার ঘটিয়েছে, তবে সবাই না, আমাদের শহরের কিছু অংশ’- বলেছেন মারাপে। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, রাস্তায় রাস্তায় বহু লোক আর শহরজুড়ে লুটপাট চলছে। যেসব ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে বড় একটি শপিং সেন্টারও রয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন তারা। পোর্ট মোরসবির মার্কিন দূতাবাস কাছেই গুলিবর্ষিত হয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে গত বুধবার রাতের মধ্যেই সহিংসতা কমে আসে। পুলিশ কাজে ফিরেছে, কিন্তু এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে গতকাল মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে। প্রতিবেশী ও পিএনজির গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা মিত্র অস্ট্রেলিয়া শান্তি বজায় রাখার জন্য দেশটির বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে পাপুয়া নিউ গিনিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্ব দেখা দিয়েছে। এতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মারাপের ওপর রাজনৈতিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিরোধীরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, জনগণের মধ্যে বিরাজমান অশান্তি থেকেই গত বুধবার দেশজুড়ে অস্থিরতা দেখা দেয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত