ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কাজাখস্তানে কূপ থেকে বাতাসে মিশেছে মিথেন গ্যাস

কাজাখস্তানে কূপ থেকে বাতাসে মিশেছে মিথেন গ্যাস

কাজাখস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি কূপ থেকে গত বছর প্রায় ছয় মাস ধরে মিথেন গ্যাস লিক হয়ে বাতাসে মিশেছে। এই গ্যাস পরিবেশের জন্য মারাত্মক বিপর্যয়কর। কাজাখস্তানের এই ঘটনাটিকে বিশ্বে মিথেন গ্যাস লিক হয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ার সবচেয়ে খারাপ ঘটনার একটি বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। বিবিসি জানায়, ওই ছয় মাসে এক লাখ ২৭ হাজার টন মিথেন গ্যাস বাতাসে মিশেছে। মিথেন গ্যাস পরিবেশের জন্য কার্বন ডাইঅক্সাইডের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। যে কূপটি থেকে মিথেন গ্যাস লিক হয় সেটির মালিক কাজাখ সরকার পরিচালিত তেল ও গ্যাস কোম্পানি বুজাকি নেফ্ট। ইউএস এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির তথ্যানুযায়ী এক বছর ধরে ৭ লাখ ১৭ হাজারের বেশি পেট্রোলচালিত গাড়ি পরিবেশের যে ক্ষতি করে ঠিক সেই পরিমাণ ক্ষতি বুজাকি নেফ্ট এর কূপ থেকে বেরিয়ে আসা মিথেন গ্যাস করেছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল মিথেন ইমিশন্স অবজারভেটরির প্রধান বলেন, ‘যে পরিমাণ গ্যাস যতটা দীর্ঘ সময় ধরে বাতাসে ছড়িয়েছে তা সত্যিই অস্বাভাবিক। এটা ভয়াবহ রকম বড় ছিল।’ বিবিসি জানায়, দক্ষিণপশ্চিম কাজাখস্তানের মানগিসতাও অঞ্চলে প্রাকৃতিক গ্যাসের খোঁজে একটি কূপে ড্রিল করার সময় সেটিতে বিস্ফোরণ ঘটে আগুন ধরে যায়। ২০২৩ সালের ৯ জুন আগুন ধরে এবং বছরের শেষ নাগাদ সেটি জ্বলতে থাকে। ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। যদিও স্থানীয়রা বিবিসিকে বলেছেন, এখনও ওই কূপটি সিমেন্ট দিয়ে পুরোপুরি সিল করে দেওয়ার কাজ চলছে। প্রাকৃতিক গ্যাস মিথেন থেকেই তৈরি হয় এবং এটি মানুষ খালি চোখে দেখতে পায় না। কিন্তু মিথেন গ্যাসের মেঘের ভেতর দিয়ে যখন সূর্যের রশ্মি প্রবেশ করে তখন এটি একটি ‘ইউনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ তৈরি করে। যার মাধ্যমে কিছু কিছু স্যাটেলাইট বাতাসে কতটা অঞ্চলজুড়ে মিথেন গ্যাস ছড়িয়েছে তা শনাক্ত করতে পারে। স্যাটেলাইটের ওই ছবি থেকেই মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি শনাক্ত হয় এবং এ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়। পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি অব ভ্যালেন্সিয়ার লুইস গুন্টার কাজাখস্তানে মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার ওই ঘটনা যাচাইয়ে সহায়তা করেছেন। তিনি বলেন, ‘জানা মতে এটা খুব সম্ভবত মানুষের দ্বারা পরিবেশে মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার দ্বিতীয় বৃহৎ বিপর্যকর ঘটনা। কেবলমাত্র নর্ড স্ট্রিম কেলেঙ্কারি এই ঘটনাকে ছাপিয়ে যেতে পারে।’ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম ১ এবং নর্ড স্ট্রিম ২-তে পানির নিচে বিস্ফোরণের কারণে দুই লাখ ৩০ হাজার টনের বেশি মিথেন গ্যাস বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়েছিল। শিল্প বিপ্লবের পর বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার পেছেনে এই মিথেন গ্যাসের দায় ৩০ শতাংশের বেশি বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত