ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বৃষ্টি-বন্যায় বিপর্যস্ত ওমান-আরব আমিরাত

বৃষ্টি-বন্যায় বিপর্যস্ত ওমান-আরব আমিরাত

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে ভারি বৃষ্টিতে কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ভারি বৃষ্টিপাত ও এর জেরে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। দেশটিতে ভ্রমণ ও চলাচলও ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এখনও এ দুর্যোগের ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশ দুটি। দেখা গেছে, ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টিতে রানওয়েতে পানি ঢুকে যাওয়ায় গত বুধবার পর্যন্ত অধিকাংশ বিমানবন্দর থেকে কোনো ফ্লাইট পরিচালনা করা যায়নি। গত বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত আকারে শুরু হয়েছে ফ্লাইট পরিষেবা। গুরুত্বপূর্ণ কিছু সড়ক-মহাসড়কও চলাচলের উপযোগী করতে কাজ শুরু করেছে আমিরাতের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর। সেসব সড়কে জমে থাকা পানি সরাতে ওয়াটার পাম্প ব্যবহার করছেন দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা। গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মুষলধারে বর্ষণ হয় মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দেশটির আবহাওয়া দপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী, সোমণ্ডমঙ্গলবার রাতে পুরো আমিরাতে ২৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা গড়ে দেশটির দুই বছরের মোট বৃষ্টিপাতের সমান। গত ৭৫ বছরে এমন প্রবল বর্ষণ আমিরাতে দেখা যায়নি বলেও উল্লেখ করেছে আবহাওয়া দপ্তর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ফুটেজ গুলোতে দেখা গেছে, রাজধানী আবুধাবি, বাণিজ্যিক কেন্দ্র দুবাই, শারজাহসহ বিভিন্ন অঞলের সড়ক পানিতে ডুবে গেছে, গ্যারেজ, দপ্তর এবং অ্যাপার্টমেন্ট-বাড়িঘর, শপিং মলগুলোর নিচ তলায় ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। চলাচলে অনুপযোগী হওয়ায় আমিরাতের অধিকাংশ সড়ক ও হাইওয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের বিশৃঙ্খল অবস্থা এখনও কাটেনি। বৃষ্টি-পরবর্তী দুবাইয়ের যেসব ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেগুলোতে দেখা যাচ্ছে- রাস্তাগুলো কোমর সমান পানিতে ডুবে আছে বাস ও গাড়িগুলো। গত রোববার উপসাগরীয় অঞ্চলের অপর দেশ ওমানে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। ব্যাপক এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশটিতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার পরের দিন সোমবার রাত থেকে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয় আমিরাতে। দুবাইয়ের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক (এমিরেত) সরকার এক নির্দেশনায় সড়ক থেকে পানি না সরা পর্যন্ত চাকরিজীবী এবং শিক্ষার্থীদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে জরুরি পরিষেবা কর্মীদের এই নির্দেশনার বাইরে রাখা হয়েছে। আমিরাতের জনগণ ব্যাপকভাবে ইন্টারনেট ও অনলাইন পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল। বৃষ্টির কারণে এই পরিষেবা ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। গত বৃহস্পতিবার থেকে ফের স্বাভাবিক হওয়া শুরু হয়েছে ইন্টারনেট-অনলাইন। মধ্যপ্রাচ্যের মরু আবহাওয়ার দেশ আমিরাতে বছরের অধিকাংশ সময়ে আবহাওয়া গরম ও শুষ্ক থাকে। গ্রীষ্মকালে দেশটিতে তাপামাত্রার পারদ অনেক সময় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্তও ওঠে। সেখানে সোমণ্ডমঙ্গলবার রাতে যে পরিমাণ বর্ষণ হয়েছে, তা দেশটির জলবায়ুর ইতিহাসে বিরল ঘটনা। আমিরাতের জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এই দুর্যোগের প্রধান কারণ। এদিকে, ওমানে গত মঙ্গলবার ঘোষিত মৃতের সংখ্যার মধ্যে অন্তত নয়জন স্কুলছাত্রী এবং তাদের ড্রাইভার রয়েছেন। মূলত তাদেরকে বহনকারী গাড়িটি গত রোববার সামাদ আ’শানে বন্যার পানিতে ভেসে যায়। দেশটির ন্যাশনাল কমিটি ফর ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট জানিয়েছে, উদ্ধারকারী দল এখনও নিখোঁজ দুই ব্যক্তিকে খুঁজছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত