মারা গেছে গাজার সেই শিশু সাব্রিন

প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

গাজার দক্ষিণে ইসরাইলের বিমান হামলার পর মৃত্যুপথযাত্রী এক মায়ের গর্ভাশয় থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল শিশু সাব্রিন আল সাকানিকে। গত রোববার মধ্যরাতের সামান্য পরে রাফার একটি হাসপাতালে অপারেশন করে তাকে ভূমিষ্ঠ করানো হয়। তাকে দেখে অনেকের চোখই ছল ছল করে ওঠে। বিশ্বমিডিয়ায় মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সাব্রিনের ছবি, ভিডিও। ভয়াবহ যুদ্ধাবস্থার মধ্যেও তার দেহে প্রাণের সঞ্চার করেছিলেন চিকিৎসকরা। তারা ‘হ্যান্ড পাম্পের’ মাধ্যমে তার ফুসফুসে বাতাস চলাচল করান। রাখা হয় ইউকিউবেটরে। আশা জেগে ওঠে সাব্রিন বেঁচে থাকবে। কিন্তু না! সবাইকে কাঁদিয়ে গত বৃহস্পতিবার সেও মারা গেছে।

তাকে চোখের জলে সমাহিত করা হয়েছে তারই মায়ের পাশে। নিহত মায়ের নাম ব্যবহার করে তার নাম রাখা হয়েছিল। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। গত সপ্তাহান্তে দুটি বিমান হামলায় রাফায় ১৬টি শিশু নিহত হয়। এর মধ্যে সাব্রিন অন্যতম। এসব শিশু তাদের বাড়িতে বসবাস করছিল। সেই বাড়িকে টার্গেট করে হামলা চালানো হয়েছে। এতে তারা নিহত হয়। তবে ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্সেসের (আইডিএফ) দাবি তারা হামাসের যোদ্ধা এবং অবকাঠামোকে টার্গেট করছে।

গত শনিবার মধ্যরাতের সামান্য আগে নিজের বাড়িতে, স্বামী শুকরি এবং তিন বছর বয়সি মেয়ে মালাককে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন সাব্রিনের মা সাব্রিন। তিনি তখন সাড়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। রাতে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তিনি ও অন্যরা। ঠিক তখনই আকাশ থেকে বোমা গিয়ে পড়ে তার বাড়ির ওপর। এতে বড় রকমের আহত হন সাব্রিন। তার স্বামী ও কন্যা মালাক নিহত হয়। তখনও তার পেটে জীবিত কন্যা সাব্রিন। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তারা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশন করে তারা কন্যা সাব্রিনকে ভূমিষ্ঠ করান। তার শ্বাস-প্রশ্বাস চালু করেন চিকিৎসকরা। তখন দেখে মনে হয়েছিল, তার অবস্থা স্থিতিশীল। ফলে তাকে ইনকিউবেটরে রাখা হয়। তবে চিকিৎসকরা তার অবস্থাকে সংকটজনক বলে বর্ণনা করেন। কারণ, জন্মের সময় সাব্রিনের ওজন ছিল মাত্র ১.৪ কেজি। শ্বাস-প্রশ্বাসের বড় রকম সমস্যা ছিল। চিকিৎসকরা বলেন, অপরিণত বয়সে তাকে ভূমিষ্ঠ করানো হয়েছে বলে এসব জটিলতা দেখা দিচ্ছে। শিশুটির তার মায়ের গর্ভে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু তার সেই অধিকারকে কেড়ে নেয়া হয়েছে।