ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইউরোপে চীনের গুপ্তচরবৃত্তি বেড়েছে

ইউরোপে চীনের গুপ্তচরবৃত্তি বেড়েছে

ইউরোপে গুপ্তচরবৃত্তি বাড়িয়েছে চীন। বিষয়টি এরই মধ্যে অনুধাবন করতে পেরেছে জার্মানি, ব্রিটেনসহ পশ্চিম ইউরোপের অনেক দেশ। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে চীন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডয়চে ভেলে।

এতে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার জার্মানির কৌঁসুলিরা আসন্ন ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে চীনা গোয়েন্দাদের তথ্য দেয়ার সন্দেহে জিয়ান জি. নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি ইইউ নির্বাচনে জার্মানির উগ্র ডানপন্থি দল এএফডি’র শীর্ষ প্রার্থী মাক্সিমিলিয়ান ক্রাহর একজন সহকারী। ক্রাহ বলেছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি জিয়ান জির সঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দেবেন। জিয়ান জি. ব্রাসেলস ও জার্মানির ড্রেসডেনে কাজ করেন।

তিনি জার্মানিতে থাকা চীনের বিরোধী কর্মীদের ওপরও নজর রাখতেন বলে কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন। জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফ্যাজা বলেছেন, জিয়ান জির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেটি হবে ‘ভেতর থেকে ইউরোপের গণতন্ত্রের ওপর হামলা।’

রাশিয়া ও চীনের গুপ্তচরবৃত্তি বাড়ায় জার্মানিও কাউন্টার গুপ্তচরবৃত্তি বাড়িয়েছে বলে জানান তিনি। বেইজিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন ইউরোপে চীনের গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগকে ‘হাইপ’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া এটি ‘চীনকে অসম্মান ও দমন করার উদ্দেশ্যে’ করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে, গত সোমবার জার্মানির আইন মন্ত্রণালয় জানায়, বেইজিংয়ের নৌবাহিনীর ব্যবহারের জন্য প্রযুক্তি জোগাড় করতে চীনের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করার অভিযোগে তিন জার্মান নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বার্লিনে চীনের দূতাবাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। একই দিন যুক্তরাজ্যে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে চীনের হয়ে গোয়েন্দাগিরি করার অভিযোগ গঠন করা হয়। এদের একজন শাসক দল কনজারভেটিভ পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে কাজ করতেন। লন্ডনে বেইজিংয়ের দূতাবাস ব্রিটেনের গোয়েন্দা তথ্য চুরির এই অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ বানোয়াট’ বলে মন্তব্য করেছে। এর আগে ২৫ মার্চ ব্রিটেন অভিযোগ করে, চীনা হ্যাকারেরা বেইজিংয়ের সমালোচনা করা ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের ই-মেইল হ্যাক করার চেষ্টা করেছে। নির্বাচনি সংস্থা হ্যাক করে কোটি কোটি মানুষের তথ্য চুরির পেছনেও চীন জড়িত বলে অভিযোগ ব্রিটেনের। ১৮ই এপ্রিল নেদারল্যান্ডসের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা এমআইভিডি তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানায়, বেইজিংয়ের সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করতে চীনের গোয়েন্দারা ডাচ্ সেমিকন্ডাক্টর, এয়ারোস্পেস ও ম্যারিটাইম শিল্পকে লক্ষ্য করেছিল।

এতে আরো বলা হয়, পশ্চিমা বিশ্বের জ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে চায় চীন। সেজন্য তাদের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োজন, যেটা তাদের নেই। তাই আইনি পদ্ধতি, গবেষণা, বিনিয়োগ, এমনকি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমেও এগুলো পেতে চায় চীন। গত বছর ২০ ডিসেম্বর বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্দ্রা ডে ক্রো জানান, বেলজিয়ামের উগ্র ডানপন্থি দল ফ্লামস বেলাংয়ের এক সদস্যকে গোয়েন্দা এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বেইজিং। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফ্লামস বেলাং দলের প্রধান ওই সদস্যকে দল থেকে বহিষ্কার করেন। ২০১৯ সালের চীনের হুয়াওয়ে কোম্পানির সাবেক কর্মী ও সাবেক পোলিশ গোয়েন্দা এজেন্টকে বেইজিংয়ের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত