ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তাইওয়ানে ব্যাপক সামরিক মহড়া শুরু করল চীন

তাইওয়ানে ব্যাপক সামরিক মহড়া শুরু করল চীন

তাইওয়ান দ্বীপের চার পাশে ব্যাপক সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। চীনা সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের কঠোর শাস্তি’ হিসেবে এই যৌথ মহড়া চালানো হচ্ছে।

দিন দুয়েক আগেই তাইওয়ানে নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নিয়েছেন এবং এর পরই চীনের এই সামরিক মহড়া শুরু হলো। গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বশাসিত তাইওয়ান দ্বীপকে ঘিরে চীন সামরিক মহড়া শুরু করেছে বলে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে তাইওয়ান প্রণালীর পাশাপাশি তাইওয়ানের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব এবং সেই সাথে কিনমেন, মাতসু, উকিউ এবং ডংগিন দ্বীপের চারপাশের এলাকায় মহড়া শুরু করে। চীনের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লি শি বলেছেন, ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’ বাহিনীর বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ডের জন্য কঠোর শাস্তি এবং বহিরাগত শক্তির হস্তক্ষেপ ও উসকানির বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কতা’ হিসেবে যৌথ এই মহড়া চালানো হচ্ছে।

উইলিয়াম লাই চিং-তে গত সোমবার তাইওয়ানের নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেওয়ার তিন দিন পরে এই মহড়া শুরু করল চীন। শপথ নেওয়ার পর বেইজিংকে এই দ্বীপের প্রতি ‘ভীতি প্রদর্শন’ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। মূলত চীন এই দ্বীপ ভূখণ্ডকে তার নিজের অংশ বলে দাবি করে থাকে। অবশ্য তাইওয়ানকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একীকরণের লক্ষ্য অর্জনের জন্য শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনার বিষয়টিও অস্বীকার করে না বেইজিং। এছাড়া লাই প্রেসিডেন্ট হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। কারণ, তাইওয়ানের নতুন এই প্রেসিডেন্টকে ‘সমস্যা সৃষ্টিকারী’ এবং ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ বলে মনে করে থাকে চীন। শপথগ্রহণের পর গত সোমবার জনসাধারণের উদ্দেশে নিজের প্রথম ভাষণে লাই বলেন, ‘তাইওয়ান একটি সার্বভৌম এবং স্বাধীন দেশ যার সার্বভৌমত্ব জনগণের মধ্যে রয়েছে’। একই সঙ্গে তার সরকার তাইওয়ানের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার বিষয়ে কোনো ছাড় দেবে না বলেও জোর দেন তিনি। এ সময় তিনি বেইজিংকে ‘তাইওয়ানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধ করতে’ এবং ‘তাইওয়ান প্রণালী ও এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার’ জন্য আহ্বান জানান। আর এর পরের দিন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই তার এই বক্তব্যের নিন্দা করেন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজাখস্তানে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ওয়াংকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘লাই চিং-তে এবং অন্যদের কুৎসিত কর্মকাণ্ড যারা জাতি এবং তাদের পূর্বপুরুষদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তা লজ্জাজনক।’

তিনি আরো বলেন, (বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের সঙ্গে) চীনের ‘পুনর্মিলন’ এবং তাইওয়ানকে ‘মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে আনা’ থেকে বেইজিংকে কিছুই আটকাতে পারবে না। ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সবাই ইতিহাসে লজ্জার স্তম্ভে স্থান পাবে’। এদিকে গত বুধবার প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে চীনের রাষ্ট্রচালিত গ্লোবাল টাইমস ট্যাবলয়েড প্রেসিডেন্ট হিসেবে লাইয়ের প্রথম বক্তৃতাকে ‘অপরাধী আচরণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং দাবি করেছে, তার এই বক্তৃতা ‘শত্রুতা এবং উসকানি, মিথ্যা এবং প্রতারণাতে ভরপুর’। চীনের সামরিক বাহিনী বলেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যৌথ সমুদ্র-আকাশপথে যুদ্ধ-প্রস্তুতি টহল, মূল লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল হামলা এবং দ্বীপ চেইনের অভ্যন্তরে ও বাইরে সমন্বিত অভিযানের ওপর ফোকাস করা হয়েছে। অবশ্য চীনের এই সামরিক মহড়া কতদিন চলবে তা বলা হয়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত