রাখাইনে সেনাবাহিনী এবং শাসক জান্তার লড়াইয়ের তীব্রতা বাড়ছেই

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে জাতিগত সেনাবাহিনী এবং শাসক জান্তার মধ্যে লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়েছে। ফলে আবারও হামলা ও বাস্তুচ্যুত হওয়ার হুমকিতে রয়েছেন দেশটির মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়। জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থার বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সংঘাতের কারণে মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই প্রতিবেশী বাংলাদেশের হাজার হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে গেছে। তবে আরও রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে অনাগ্রহী দেশটি। এদিকে, রাখাইনে যেসব রোহিঙ্গা রয়ে গেছেন তারা এখন তীব্র মানবিক সংকটে রয়েছেন।

মে মাসের শুরুর দিকে বুথিদাউং শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছিল আরাকান আর্মি। জাতিগত এই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বর্ণবাদী আচরণ করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে আরাকান আর্মি। এই দাবিগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। এ বিষয়ে জান্তার এক মুখপাত্রকে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। আরাকান আর্মি এখন সীমান্ত শহর মংডু দখলে চেষ্টা করেছে। এই শহরে একটি বৃহৎ রোহিঙ্গা জনসংখ্যা বসবাস করছে। এই শহর ধরে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে জান্তা। ফলে সেখানে আরও ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘বর্তমানে সেখানে সহিংসতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার স্পষ্ট ঝুঁকি দেখতে পাচ্ছি আমরা। কেননা, প্রতিবেশী মংডু শহর দখল নিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এখানে সামরিক বাহিনী ফাঁড়ি রয়েছে এবং একটি বৃহৎ রোহিঙ্গা সম্প্রদায় বাস করে।’ কয়েক দশক ধরেই নিপীড়নের শিকার হয়েছেন রোহিঙ্গারা। ২০১৭ সালের সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের পর প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। বাংলাদেশের এক রোহিঙ্গা শরণার্থী মোহাম্মদ তাহের রয়টার্সকে বলেছেন, সম্প্রতি মংডুতে এক বন্ধুর সঙ্গে কথা হয়েছে তার। সেখানে বসবাসকারী আতঙ্কিত রোহিঙ্গাদের অবস্থা বর্ণনা করেছেন তিনি। তাহের বলেন, ‘অনেকেই রাখাইন থেকে পালাতে চায়। তবে রোহিঙ্গাদের জন্য নিজেদের দরজা উন্মুক্ত করছে না বাংলাদেশ।’ জাতিসংঘের একটি অনুমান অনুযায়ী, সাম্প্রতিক যুদ্ধের কারণে সীমান্তবর্তী নাফ নদীর তীরবর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজারে রোহিঙ্গা।

গত সপ্তাহে বাংলাদেশের এক বর্ডার গার্ড কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, কোনও রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে অশান্ত রয়েছে মিয়ানমার। দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জান্তার সঙ্গে লড়াইয়ে লিপ্ত রয়েছে।