জামায়াতে ইসলামি পাকিস্তান, জামিয়াত উলেমা ই ইসলাম-ফজলসহ (জেইউআই-এফ) বিভিন্ন ইসলামি দল এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) বিক্ষোভ ও আন্দোলন কর্মসূচির জেরে ফের অস্থিরতা শুরু হয়েছে পাকিস্তানে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজধানী ইসলামাবাদ এবং পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
সম্প্রতি দেশজুড়ে বিদ্যুতের দাম প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে পাকিস্তানের সরকার। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্ট কোরআন অবমাননার দায়ে বন্দি জনৈক পাকিস্তানি নাগরিক মোবারক সানি মামলার রায় পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন। এই দুই ইস্যুকে ঘিরে কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভ করছিল জামায়াতে ইসলামি, জেইউআইএফ এবং অন্যান্য ইসলামি দলগুলো। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে পিটিআই কর্মসূচি ঘোষণা করার পর উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী ইসলামাবাদ ও পাঞ্জাব প্রদেশ।
এই অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বৃহস্পতিবার রাতে ইসলামাবাদ ও পাঞ্জাবের সর্বত্র ১৪৪ ধারা জারি করে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকার। এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার থেকে রাজধানীতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ১৪৪ জারি করা হলো। পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে। জনসাধারণকে কোনো অবস্থাতেই ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জননিরাপত্তার স্বার্থে পাঞ্জাব প্রদেশের সর্বত্র ১৪৪ ধারা জারি করা করা হয়েছে। জনগণকে সরকারের এই আদেশ মেনে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে। সেইসঙ্গে জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়- এমন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশও দেয়া হচ্ছে। অন্যথায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হবে প্রাদেশিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, শুক্রবার রাজধানী ইসলামাবাদকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি সংযোগ সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ, সেইসঙ্গে শহরজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল চলছে। পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামি, জেইউআইএফ এবং পিটিআইয়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, গত দু’দিন ধরে এসব দলের নেতাকর্মী-সমর্থকদের গ্রেপ্তার করতে অভিযানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং এরইমধ্যে গ্রেপ্তারের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে।
