ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কলকাতায় নারী চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যায় ভারতজুড়ে বিক্ষোভ

কলকাতায় নারী চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যায় ভারতজুড়ে বিক্ষোভ

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ভারতজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে সিবিআই। সংস্থাটি অপরাধের সম্ভাব্য প্রমাণ ধ্বংসসহ ছয়টি মূল বিষয় সামনে রেখে তদন্ত করবে। নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে গতকাল বুধবার বিকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এদিকে কলকাতা হাইকোর্ট মামলাটি ফেডারেল এজেন্সির কাছে হস্তান্তর করেছে। ফলে ফেডারেল এজেন্সিও হাসপাতাল প্রশাসনের অবহেলার এবং জড়িত থাকার দাবি তদন্ত করবে।

সূত্র জানায়, সিবিআইয়ের ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল- ক) ওই নারী চিকিৎসক একজনের নাকি দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিল? খ) অভিযুক্ত বেসামরিক স্বেচ্ছাসেবক পুলিশ সঞ্জয় রায় কি একাই ছিলেন? গ) ঘটনার পর আলামত নষ্ট করা হয়েছিল কি? ঘ) হত্যাকে কেন প্রথমে আত্মহত্যা হিসাবে রিপোর্ট করা হয়েছিল? ঘ) হাসপাতাল প্রশাসন জড়িত ছিল কি না এবং চ) ডাক্তারকে হত্যার পর কেন শুধু পুলিশকে জানানো হয়েছিল? তদন্তের জন্য চিকিৎসক ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে সিবিআইয়ের একটি বড় দল কলকাতায় পৌঁছেছে।

সূত্র জানিয়েছে, সিবিআইয়ের এসসি ১ বা বিশেষ অপরাধ ইউনিট আঙুলের ছাপ, পায়ের ছাপ এবং অন্যান্য ফরেনসিক প্রমাণের জন্য ঘটনাস্থল পরীক্ষা করবে, যা অভিযুক্তকে শনাক্ত করবে। দলটি অপরাধের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে মোবাইল ফোনের ডেটা বিশ্লেষণ, রাজ্য পুলিশ বাহিনীর সংগৃহীত আলামতগুলো পর্যালোচনা এবং সঞ্জয় রায়ের জবানবন্দি পুনরায় রেকর্ড করবে। হাসপাতালের কর্মী এবং নারী ডাক্তারের বন্ধুদেরও জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে। এর মধ্যে সেই রাতে ডাক্তারের সঙ্গে ডিনার করা চারজন, পরিবার এবং সহকর্মীরাও রয়েছেন। এ ছাড়া প্রাপ্ত সব সিসিটিভি ফুটেজ জব্দ করা হবে।

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঁধে দেয়া সময়সীমা বাতিল করে কলকাতা হাইকোর্ট গত মঙ্গলবার সিবিআইকে মামলাটি হাতে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি পালনের ডাক দিয়েছে ২১টি হাসপাতাল। এর মধ্যে কলকাতার সব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল তো রয়েছেই, রাজধানী নয়াদিল্লি ও মুম্বাই শহর এবং কর্ণাটক ও উত্তর প্রদেশ রাজ্যেও বিক্ষোভ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি পরিষেবা ছাড়া কোনো সেবা দেননি চিকিৎসকেরা। তবে কিছু কিছু হাসপাতালে রোগীদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে কর্মবিরতিতে রাশ টানা হয়েছে। ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) বলেছে, কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে যা ঘটেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন। দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

একই সঙ্গে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার আরজি কর মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের চারতলায় রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় নারী চিকিৎসকের দেহ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে।

খুন ও ধর্ষণের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে শামিল হন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। পরে সেই আন্দোলনে যোগ দেন অন্য চিকিৎসকেরা। তবে সেই আন্দোলন শুধু আরজি করের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত