ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জ্বালানি সংকটে বন্ধের শঙ্কায় গাজার বহু হাসপাতাল

জ্বালানি সংকটে বন্ধের শঙ্কায় গাজার বহু হাসপাতাল

জ্বালানি সংকটে বন্ধের আশঙ্কায় গাজার বহু হাসপাতাল। এ ছাড়া গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন আরো ৩৫ ফিলিস্তিনি। এনিয়ে নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। এদিকে হামাস অভিযোগ করে বলেছে গণহত্যার জন্য ইসরায়েলকে সময় দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে জার্মানি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে অনড় বলে জানিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর শোলৎজ। খবর বিবিসির। গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে গাজার হাসপাতালগুলোকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, হাসপাতালে জ্বালানির ঘাটতির কারণে শিশুরা মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহের আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের মুখপাত্র বলেছেন, মিসরের সঙ্গে রাফা সীমান্ত ক্রসিং ২০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকায় তাদের হাসপাতালটি চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সরঞ্জাম সরবরাহের তীব্র ঘাটতি অনুভব করছে। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের কর্মীরা আহত রোগীদের সবচেয়ে মৌলিক চিকিৎসা প্রয়োজনীয়তাও সরবরাহ করতে পারে না এবং এটিই স্পষ্ট ইঙ্গিত যে-গাজায় সমগ্র স্বাস্থ্য খাত ভেঙে পড়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজার অন্তত ৩৩টি স্বাস্থ্য অবকাঠামো বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম চালিয়ে যেতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৪ হাজার লিটার জ্বালানি প্রয়োজন। এদিকে ফিলিস্তিনি তথ্যকেন্দ্র প্যালিনফো জানিয়েছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো দক্ষিণ গাজা শহরের সাবরা পাড়ায় আবাসিক বাড়িগুলোতে গোলাবর্ষণ করে। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে গাজায় গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছে অন্তত ৪০ হাজার ১৩৯ জন। আহত কমপক্ষে ৯২ হাজার ৭৪৩ জন। এদিকে যুদ্ধবিরতি আলোচনার কথা বলে ইসরায়েলকে গাজায় গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সময় দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সোমবার এক বিবৃতিতে হামাস এ অভিযোগ করে। এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ঘোষণা দেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকেও ওই চুক্তির প্রস্তাব গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযোগ করে এমন মন্তব্য করলো হামাস। ব্লিঙ্কেনের প্রস্তাবটিতে নেতানিয়াহুর ইচ্ছেরই প্রতিফলন ঘটেছে উল্লেখ করে একে সেতুবন্ধনের প্রস্তাব বলেছে হামাস। অন্যদিকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ব্যতীত মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয় বলে মনে করে জার্মানি। দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ এক ভাষণে জানিয়েছেন, জার্মানি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে অনড় অবস্থানে রয়েছে। গত সোমবার জার্মানির উত্তরাঞ্চলীয় শহর ব্রেমেনের টাউন হলে আয়োজিত জনসভায় শোলৎজ বলেন, আমরা আগেও বহুবার বলেছি, আবারো বলছি সংঘাত ও অস্থিতিশীলতা মধ্যপ্রাচ্যের বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায় দ্বিরাষ্ট্র সমাধান। শান্তিপূর্ণভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন এবং ইসরায়েলের পাশাপাশি সেই রাষ্ট্রকে চলতে দেয়ার মধ্যেই মুক্তির উপায় নিহিত। একটি জাতি (ফিলিস্তিনি) যদি স্বাধীনতার আশা হারিয়ে ফেলে, তাহলে গোটা মধ্যপ্রাচ্য বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে এটাই ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানির অবস্থান। যে যত সমালোচনাই করুক, আমরা এই অবস্থানে অনড় থাকব।

এদিকে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার খান ইউনিস এলাকা থেকে ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আইডিএফের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত সোমবার মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। আইডিএফের বিবৃতি অনুসারে, যাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন- ইয়াগেভ বুকশটাব, আলেকজান্ডার ড্যানসিগ, আভ্রাহাম মুনডার, ইয়োরাম মেটজগার, হাইম পেরি এবং ব্রিটিশ-ইসরায়েলি নাদাভ পপলওয়ে। ইসরায়েল এর আগে পাঁচজনের মৃত্যুর ঘোষণা দিলেও আভ্রাহাম মুনডারকে তখনো জীবিত বলে ধারণা করা হয়েছিল। আইডিএফ এবং অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেটের সমন্বয়ে উদ্ধার অভিযানটি পরিচালিত হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত