ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইউক্রেনে রাশিয়ার ৬৭ ড্রোন হামলা

ইউক্রেনে রাশিয়ার ৬৭ ড্রোন হামলা

এএফপিইউক্রেনের ১১টি অঞ্চলে গত শুক্রবার রাতে ৬৭টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইরানের তৈরি শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করে এসব হামলা চালানো হয়। তবে এর মধ্যে ৫৮টি ভূপাতিত করতে সমর্থ হয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। গতকাল শনিবার মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে দেওয়া পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির বিমানবাহিনী। পোস্টে বলা হয়, রাশিয়া অধিকৃত উপদ্বীপ থেকে ড্রোনগুলো নিক্ষেপ করা হয়। তবে এ সময় ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলো সক্রিয় ছিল। টেলিগ্রামে দেয়া পৃথক পোস্টে দেশটির একজন পার্লামেন্টারিয়ান জানিয়েছেন, এমনকি রাজধানী কিয়েভের পার্লামেন্ট ভবনের পাশেও ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। ধ্বংসাবশেষের একটি টুকরা ভবনের প্রধান প্রবেশদ্বারের কাছে পড়েছিল। পার্লামেন্ট ভবনের কাছে মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অন্তত চারটি ধ্বংসাবশেষের ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি। কিয়েভের এতটা ভেতরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা একটি বিরল ঘটনা। শহরটি সোভিয়েত যুগের নেটওয়ার্ক এবং পশ্চিমাদের সরবরাহ করা বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়ে সুরক্ষিত।

এ ছাড়া শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনটিকে ইউক্রেনের সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থানগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওই এলাকাতেই প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রিসভা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দপ্তর রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল শনিবার ভোরেও ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে কথিত বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এর পর থেকে গত আড়াই বছরে দেশটিতে কয়েক হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ব্যয়বহুল ক্ষেপণাস্ত্রের বিকল্প হিসেবে ইরানের ডিজাইন করা শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালাতে শুরু করে তারা।

গত শুক্রবার রাতভর ইউক্রেনে সিরিজ ড্রোন হামলার আগের দিন আসন্ন শরতের মধ্যেই এই যুদ্ধের অবসান ঘটানোর আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

এই লক্ষ্যে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোর পক্ষ থেকে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগেরও আহ্বান জানান তিনি। জার্মানিতে অবস্থিত মার্কিন বিমানঘাঁটি রামস্টেইনে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে আলাপকালে এ নিয়ে কথা বলেন জেলেনস্কি। পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, জেলেনস্কি পশ্চিমা দেশগুলোকে ইউক্রেনের মাটিতে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য সমরাস্ত্র উৎপাদন বাড়াতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। অবিলম্বে যুদ্ধ থামানোর জন্য তহবিল দরকার জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা দ্রুত সবকিছু তৈরি করতে প্রস্তুত, যা আমাদের এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সাহায্য করবে। স

ত্যিকারের শান্তির জন্য রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে এবং সেই চাপ হবে সিদ্ধান্তমূলক। আসুন, আমরা এই শরৎকে রুশ আগ্রাসনের পতনের সময় করে তুলি।’ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন অস্ত্র তৈরির গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা এবং আর-২৭ আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের বিকল্প ডিজাইন ও নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের সঙ্গে কাজ করছে। ইউক্রেনকে ড্রোন এবং ইলেকট্রনিক-ওয়ারফেয়ার সিস্টেম তৈরির সুযোগ করে দিতে ওয়াশিংটন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কেনার জন্য ২০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি বরাদ্দ দিয়েছে। রণক্ষেত্রে কিয়েভ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেশ কয়েকটি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। রুশ সেনারা অবিচ্ছিন্নভাবে দনবাসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। পোকরভস্ক শহরের অবস্থাও একই রকম। দনবাস থেকে রুশ বাহিনীকে হটাতে গত ৬ আগস্ট রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে আক্রমণ চালিয়ে কয়েকটি গ্রামের দখল নেয় ইউক্রেনীয় বাহিনী। তবে এটি করে দনবাস অঞ্চল থেকে রুশ বাহিনীকে হটানো সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত