অবৈধ অনুপ্রবেশ এবার জার্মানির স্থলসীমান্তে কঠোর নিয়ন্ত্রণ

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জার্মান সরকার বলছে, চলতি বছরের প্রথম আট মাসেই অভিবাসন ২১ শতাংশের বেশি কমে গেছে।

অবৈধ অনুপ্রবেশ কমাতে জার্মান সরকার স্থলসীমান্তে কঠোর পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে। সীমান্ত থেকেই আরো শরণার্থী ফেরত পাঠাতে চায় দেশটির সরকার। কিন্তু এমন উদ্যোগের বিভিন্ন দিক নিয়ে উঠছে প্রশ্নও।

অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতে জার্মানির জোট সরকার যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছে না- এমন অভিযোগ বেশ কিছুকাল ধরে শোনা যাচ্ছে। চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সেই লক্ষ্যে কড়া পদক্ষেপের ঘোষণা করলেও নিন্দুকদের মতে, বাস্তবে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। সরকার অবশ্য পরিসংখ্যান দেখিয়ে দাবি করছে, চলতি বছরের প্রথম ৮ মাসেই অভিবাসন ২১ শতাংশের বেশি কমে গেছে। কিন্তু জোলিঙেন শহরে অবৈধ আশ্রয়প্রার্থীর ছুরি চালানোর ঘটনা এবং তার ঠিক পরই পূর্বের দুই রাজ্যে চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দলের অভাবনীয় সাফল্যের পর শলৎসের সরকার একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। প্রথমে বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত একদল অবৈধ শরণার্থীকে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এবার জার্মানির সব স্থলসীমান্তে আরো কড়া নিয়ন্ত্রণ চালু করার কথা ঘোষণা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার। গত সোমবার জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে আপাতত ছয় মাসের জন্য জার্মানির স্থলসীমান্তে বাড়তি পদক্ষেপ নেয়া হবে। মুক্ত সীমানার শেঙেন এলাকার সদস্য হওয়া সত্ত্বেও জার্মানি এমন পদক্ষেপ নেবে।

ফেসার বলেন, বিশেষ এক উদ্যোগের আওতায় কর্তৃপক্ষ সরাসরি সীমান্তেই আরো বেশি শরণার্থীদের ফিরিয়ে দেয়ার ক্ষমতা পাবে। তবে সেই উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত জানানি।

ফেজার বলেন, ইউরোপীয় কমিশন এবং প্রতিবেশী দেশগুলোকে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানানো হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে উগ্র ইসলামপন্থি সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং সীমান্তে অপরাধমূলক সংগঠনগুলোকেও দমন করতে চায় সরকার। অবৈধ অনুপ্রেবেশের প্রশ্নে কোণঠাসা শলৎসের সরকার চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দল ও নতুন বামণ্ডরক্ষণশীল বিএসডব্লিউ দলের সাফল্যের মুখে সাধারণ মানুষের দুশ্চিন্তা কমাতে বাড়তি তৎপরতা দেখাচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। প্রধান বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরের জনপ্রিয়তাও সরকারের মাথাব্যথার কারণ। সরকারি জোটের শরিক দলগুলো দুই সপ্তাহ পর পূর্বের ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে নির্বাচনে অবৈধ অভিবাসনে রাশ টানতে নতুন সব পদক্ষেপের সুফল পায় কি না, সে বিষয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। উল্লেখ্য, আগামী বছর জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। অবশ্য অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে জার্মানির একক পদক্ষেপ ইউরোপীয় স্তরে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিশেষ করে মুক্ত সীমানার শেঙেন এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য নিয়ন্ত্রণ চালু রাখা কঠিন হতে পারে। একমাত্র অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ওপর হুমকি দেখা দিলে শেঙেন এলাকার দেশগুলো চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে সীমান্তে সাময়িক নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেয়ারহার্ড কামের জার্মানির ‘বিল্ড’ সংবাদপত্রকে গত সোমবার জানিয়েছেন, তার দেশ জার্মান সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠানো কোনো শরণার্থীকে গ্রহণ করবে না।