ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভারতে ‘এক দেশ এক ভোট’ কি সত্যিই হবে?

ভারতে ‘এক দেশ এক ভোট’ কি সত্যিই হবে?

সারাদেশে একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে আরো এক ধাপ এগিয়েছে ভারত সরকার। দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। মূলত সাবেক রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ‘এক দেশ এক ভোটের’ সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে সুপারিশ জানানোর ভার ছিল এই কমিটির ওপর। এই কমিটি যে সুপারিশ দিয়েছিল, গত বুধবার তাতে অনুমোদন দিয়েছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা। কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী প্রথম দফায় লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভাগুলোর নির্বাচন একসঙ্গে হবে। দ্বিতীয় দফায় ভোট গ্রহণ করা হবে পৌরসভা ও পঞ্চায়েতে। প্রথম ও দ্বিতীয় দফার মধ্যে সর্বাধিক ব্যবধান হতে পারে ১০০ দিনের। সব নির্বাচনের জন্য একটি ভোটার তালিকা নির্ধারিত করার সুপারিশ মেনে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পদক্ষেপ অনুযায়ী ২০২৯ সালে যে লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা, তার সঙ্গে রাজ্যগুলোর বিধানসভা নির্বাচন সেরে ফেলতে হবে। কিন্তু ২০২৯ সালে লোকসভার মেয়াদ শেষ হলেও সব রাজ্য বিধানসভার মেয়াদ শেষ হবে না। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট হবে ২০২৬ সালে। পাঁচ বছর পর ২০৩১ সালে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। অন্যান্য অনেক রাজ্যের ক্ষেত্রে একই সমস্যা রয়েছে। সেক্ষেত্রে কীভাবে পাঁচ বছর পর একযোগে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন দেশজুড়ে সম্পন্ন হবে, তা স্পষ্ট করতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘সরকার দেশজুড়ে এ বিষয়ে মতৈক্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবে, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এরপর শুরু হবে সুপারিশ বাস্তবায়নের আইনি প্রক্রিয়া। তার দায়িত্ব দেয়া হবে একটি বিশেষ কমিটিকে।’ তবে ২০২৯ সালে সব রাজ্যের বিধানসভার মেয়াদ না শেষ হলে কীভাবে একত্রে ভোট হবে, এই প্রশ্নের সদুত্তর বৈষ্ণব দিতে পারেননি। মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কিছু পরেই এক্স হ্যান্ডেলে নিজের মত জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি লেখেন, ‘দেশের গণতন্ত্রকে আরো মজবুত ও সবার অংশগ্রহণের পক্ষে অনুকূল করে তোলার লক্ষ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’ সাবেক প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বাধীন কমিটি ৪৭টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছিল। এ নিয়ে আগেই আপত্তি জানিয়েছে ১৫টি দল। এর মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, ‘সরকারের এই পদক্ষেপ সংবিধান, গণতন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী। দেশের জনতা একে সমর্থন করবে না। এর মাধ্যমে আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করা হয়েছে।’ তৃণমূল সংসদ সদস্য ডেরেক ও ব্রায়েনের বক্তব্য, ‘এটা গণতন্ত্রবিরোধী বিজেপির একটা চমক। এর আগে বিজেপি যেমন ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এটাও সেরকমই একটা উদ্যোগ।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত