সৌদি আরবে কর্মরত প্রবাসী কর্মীদের জন্য বেশ কিছু নীতিমালা সংস্কার ও প্রণয়ন করেছে দেশটির সরকার। দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মূল কাজে অনুপস্থিত হওয়ার দিন থেকে অন্য নিয়োগকর্তা বদল বা অন্য কাজে যোগদানের জন্য দুই মাস (৬০ দিন) সময় পাবেন প্রবাসী শ্রমিকরা। এই সময়ের মধ্যে তা করতে ব্যর্থ হলে চূড়ান্ত এক্সিট ভিসায় তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাবে কর্তৃপক্ষ। মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম গাল্ফ নিউজ এ খবর জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নির্দিষ্ট এই সময়ের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নেয়া হলে শ্রমিকরা ‘কাজে অনুপস্থিত’ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে এই অনুপস্থিতির প্রতিবেদন প্রত্যাহার করা যাবে না। প্রবাসী শ্রমিকদের একটি বিশাল অংশের আবাসস্থল সৌদি আরব। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ নিয়োগকর্তাদের ওপর শ্রমিকদের সৌদি আরব ছাড়তে চূড়ান্ত এক্সিট ভিসা নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক করেছে। সৌদি আরবের জেনারেল ডিরেক্টরেট অব পাসপোর্ট বলেছে, একটি চূড়ান্ত এক্সিট ভিসা ইস্যু হওয়ার পর প্রবাসী কর্মীর দেশে ফেরত যাওয়া পর্যন্ত সব বিষয় তদারকি করতে হবে নিয়োগকর্তাদের। শুধু চূড়ান্ত এক্সিট ভিসা পাওয়ার মধ্যেই নিয়োগকর্তার দায়িত্ব সীমাবদ্ধ নয়। কোনো শ্রমিকের জন্য একটি ‘ফাইনাল এক্সিট’ ভিসা ইস্যু করার পর যদি সৌদি আরবে ওই কর্মীর অবস্থান শনাক্ত করতে নিয়োগকর্তা ব্যর্থ হলে, অবশ্যই ভিসা বাতিলের জন্য তাদের আবেদন করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষের কাছে শ্রমিকের অনুপস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরব দেশটির চাকরির বাজারকে আরো আকর্ষণীয় ও প্রতিযোগিতামূলক করতে শ্রম সংস্কার চালু করেছে। সম্প্রতি, নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে শ্রমিকদের চুক্তিভিত্তিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য দেশটির শ্রমণ্ডবিষয়ক আইনে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের অনুমোদন দিয়েছে সৌদি সরকার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, বর্তমানে অনির্দিষ্ট মেয়াদের একটি চুক্তির অবসান করতে চাইলে শ্রমিককে ৩০ দিনের এবং নিয়োগকর্তাকে ৬০ দিনের একটি নোটিশ দিতে হবে। এই আইনের বাইরে বিনা নোটিশে কোনো শ্রমিক কাজ ছাড়তে পারবেন না বা কোনো নিয়োগকর্তা শ্রমিককে কাজ থেকে ছাঁটাই করতে পারবেন না। শ্রমনীতিতে এমন পরিবর্তন আনার কারণে নিয়োগকর্তারা এখন এমন কাজগুলো এড়াতে বাধ্য হচ্ছে যা কর্মীদের কাজ করার সমান সুযোগ পাওয়ার অধিকার ক্ষুন্ন করে। দেশটিতে মাতৃত্বকালীন ছুটি ১০ সপ্তাহ থেকে ১২ সপ্তাহে উন্নীত হয়েছে। আরেকটি সংশোধনীতে ‘ট্রায়াল’ নিয়োগের সর্বোচ্চ মেয়াদ ১৮০ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, চুক্তি শেষে শ্রমিকদের দেশে ফেরত পাঠানোর সময় নিয়োগকর্তাদের জন্য ‘রিটার্ন টিকিট’-এর খরচ বহন বাধ্যতামূলক করেছে সৌদি আরব।