জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মিয়ানমার ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও অপরাধের জালে আটকে পড়েছে। সেখানে মানবিক বিপর্যয়ের মাত্রা নজিরবিহীন অবস্থায় পৌঁছেছে।
জাতিসংঘের মিয়ানমার-বিষয়ক বিশেষ দূত জুলি বিশপ গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটিকে বলেছেন, মিয়ানমারের নেতাদের অবশ্যই বর্তমান প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মনোভাব থেকে সরে আসতে হবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। জুলি বিশপ সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সশস্ত্র সংঘাত চলতে থাকলে মিয়ানমারের জনগণের সমস্যার সমাধানে কোনো অগ্রগতি সম্ভব নয়। সংঘাতের ফলে মিয়ানমারের আইনের শাসন গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক অপরাধের প্রসারকে ত্বরান্বিত করছে। তিনি জানান, মিয়ানমার এখন সংগঠিত অপরাধের ক্ষেত্রে অন্যান্য রাষ্ট্রের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে।
অস্ত্র উৎপাদন ও বাণিজ্য, মানবপাচার, মাদক উৎপাদন ও পাচার এবং প্রতারণার কেন্দ্রগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে জনগণের প্রতিবাদ কঠোরভাবে দমন করে জান্তা। বিগত বছরগুলোতে শক্তিশালী জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো মিয়ানমারে নতুন নতুন অঞ্চল দখল করেছে। এসব স্থানে সামরিক বাহিনী বিদ্রোহীদের প্রতিরোধে হিমশিম খাচ্ছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, মিয়ানমারে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং ১ কোটি ৮৬ লাখ মানুষ মানবিক সহায়তার প্রয়োজন। বিশপ উল্লেখ করেছেন, তিনি মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংসহ সরকারি ও বিরোধী পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে, বৈঠকগুলোর সুনির্দিষ্ট সময়সূচি জানাননি তিনি। বিশপ আরো বলেন, তিনি চীন ও থাইল্যান্ড সফর করেছেন। শিগগিরই ভারত ও বাংলাদেশ সফর করবেন। প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে মিয়ানমারের সংকট সমাধানে চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান জানান তিনি।