কেমন ছিল ট্রাম্প ও হ্যারিসের শেষ প্রচারণা
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পেনসিলভানিয়া ও অন্যান্য ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যে ডেমোক্র্যাটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষ মুহূর্তের প্রচারণা চালিয়েছেন। শেষ প্রচারণায় দুই প্রার্থীই জয়ের প্রত্যাশা করছেন এবং ভোটারদেরকে তাদের পক্ষেই ভোট দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। এবারের নির্বাচনি প্রচারণায় উঠে এসেছে বিভিন্ন নাটকীয় ঘটনা। দুটি হত্যা প্রচেষ্টা এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা, অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রার্থীতা থেকে সরে যাওয়ার পরে হঠাৎ প্রার্থী হন। বিশ্লেষক সংস্থা অ্যাডইমপ্যাক্ট-এর তথ্য অনুযায়ী, মার্চ থেকে এই প্রচারণায় ২.৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে। তবে, মতামত জরিপ অনুযায়ী ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প ও ৬০ বছর বয়সী হ্যারিস প্রায় সমান সমর্থন পাচ্ছেন। এই নির্বাচনের ফলাফল পেতে গতকাল মঙ্গলবার ভোট গ্রহণের পরেও কিছুদিন সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্প এরই মধ্যে আভাস দিয়েছেন যে, তিনি কোনোভাবে পরাজিত হলে তা নিয়ে আইনি লড়াই করবেন, যেমনটি তিনি ২০২০ সালে করেছিলেন।
গত সোমবার, উভয় প্রার্থী পেনসিলভানিয়ায় সমবেত হন ভোটারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে। এই রাজ্যটিতে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট রয়েছে। এটি নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্প শেষ দিনের প্রচারণায় নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া ও মিশিগানে জনসভা করেন। পরে তিনি তার ফ্লোরিডার পাম বিচ বাসভবনে ফিরে যান। অন্যদিকে, হ্যারিস পেনসিলভানিয়ায় পাঁচটি জনসভার সময়সূচি রেখেছিলেন এবং সেখানে কিছু জায়গায় ট্রাম্পও প্রচারণা চালান। এর মধ্যে রিডিং ও পিটসবার্গ রয়েছে।
রাতের শেষে ফিলাডেলফিয়ার ‘রকি স্টেপস’-এ ফিলাডেলফিয়া মিউজিয়াম অব আর্টে তার প্রচারণার শেষ সমাবেশটি আয়োজন করেন হ্যারিস। সেখানে লেডি গাগা ও ওপরাহ উইনফ্রের মতো তারকাদের উপস্থিতিতে জনসমাগম ঘটে এবং হ্যারিস নিজেকে ‘রকি’ চলচ্চিত্রের মতো একজন আন্ডারডগ হিসেবে উপস্থাপন করেন যিনি বিজয়ের জন্য লড়াইয়ে প্রস্তুত। ফিলাডেলফিয়ার জনসমুদ্রে তিনি বলেন, আজ রাতেই শেষ করছি, যেমন শুরু করেছিলাম: আশাবাদ, শক্তি ও আনন্দ নিয়ে। হ্যারিসের ভাষণে জনতা সাড়া দেয় ‘আমরা জিতব’ বলে। তিনি এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের একটি হিসেবে অভিহিত করেন।
মিশিগানে ট্রাম্পের শেষ প্রচারণা : পিটসবার্গের এক বৃহৎ জনসভায় ট্রাম্প তার সমর্থকদের সামনে বলেন, চার বছর ধরে আমরা এই দিনের অপেক্ষায় আছি। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, পেনসিলভানিয়ায় জয় পেয়ে তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারবেন। জনসভায় তিনি বলেছেন, আমরা পেনসিলভানিয়ায় জয়ী হতে যাচ্ছি।
আগাম ভোটের প্রবণতা : হ্যারিসের প্রচারণা দল দাবি করেছে যে, তাদের অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী, অনির্ধারিত ভোটাররা তাদের পক্ষে থাকছেন এবং আগাম ভোটে মূল অংশীদার, বিশেষ করে তরুণ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটারের অংশগ্রহণ বেড়েছে। অন্যদিকে, ট্রাম্পের প্রচারণা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা নারীদের ভোটে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করছেন। যদিও হ্যারিস নারীদের মধ্যে বেশি সমর্থন পাচ্ছেন এবং ট্রাম্প পুরুষদের মধ্যে এগিয়ে আছেন। টার্গেটেড ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ট্রাম্পের প্রচারণা দল ইলন মাস্কের মতো সমর্থকদের সহায়তায় কাজ করে চলেছে।
দুই প্রার্থীর প্রতিশ্রুতি ও প্রচারণা বিতর্ক : ট্রাম্পের নির্বাচনি মঞ্চে অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল অর্থনীতি। তিনি দাবি করেছেন হ্যারিস নির্বাচিত হলে অর্থনৈতিক বিপর্যয় নেমে আসবে। তা ছাড়া, নারীদের অধিকারের প্রশ্নে তিনি বলেছেন, নারীরা এটা পছন্দ করুক বা না করুক, আমি তাদের রক্ষা করব। পাশাপাশি, ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলেটদের ক্রীড়া থেকে দূরে রাখা হবে। অন্যদিকে, হ্যারিসের প্রচারণা দল ট্রাম্পের সম্ভাব্য নির্বাচন চ্যালেঞ্জের প্রস্তুতির মুখোমুখি রয়েছে এবং দলটির আইনি পরামর্শদাতা ডানা রিমাস বলেছেন, ভোটাররাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প নয়।