হতাশ হবেন না, ভোটে পরাজয় মেনে নিচ্ছি, লড়াই ছাড়ছি না

কমলা

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারো বিজয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ছাড়া মার্কিন আইনসভার উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ উভয় ক্ষেত্রেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে রিপাবলিকান পার্টি। এমন অবস্থায় পরাজয় স্বীকার করে নির্বাচনের ফল মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস।

সমর্থকদের হতাশ না হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কমালা বলেন, ভোটে পরাজয় মেনে নিচ্ছি, কিন্তু লড়াইয়ে হার মানছি না। একই সঙ্গে তিনি ট্রাম্পকে ক্ষমতা হস্তান্তরে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। নির্বাচনে হারার পর স্থানীয় সময় গত বুধবার প্রথম জনসমক্ষে কথা বলেন কমলা হ্যারিস। সেখানে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তরে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘আমি জানি অনেকের মনে হচ্ছে আমরা হয়তো একটি অন্ধকার সময়ে প্রবেশ করছি, কিন্তু আমাদের সবার ভালোর জন্য আমি আশা করি তেমনটি হবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘হতাশ হবেন না। এখন ক্ষোভ বা হতাশা প্রকাশের সময় নয়, এখন আমাদের যথাযথ কাজ ও লড়াই করার সময়’। তিনি বলেন, এখনই সময় ‘স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের জন্য সংগঠিত হওয়ার, সংগঠিত করার এবং সেটিতে নিযুক্ত থাকার এবং ভবিষ্যত যেন আমরা একসাথে গড়ে তুলতে পারি’। কমালা হ্যারিস তরুণ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এটা ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের দেশের জন্য লড়াই সবসময়ই মূল্যবান। তিনি বলেন, দুঃখিত এবং হতাশ হওয়া ঠিক আছে, কিন্তু দয়া করে জেনে রাখুন- এটা ঠিক হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, ‘কখনো কখনো লড়াই কিছুটা সময় নেয়- এর অর্থ এই নয় যে আমরা জিতব না। হাল ছেড়ে দিও না। আপনার সেই ক্ষমতা আছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের এই ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, তার দল ‘শান্ত উপায়ে’ লড়াই করবে। হ্যারিস বলেন যে তার কাজ পটভূমিতে চলতে থাকবে, কারণ তার দল ‘শান্ত উপায়ে’ লড়াই করতে দেখায়। নিজের ভোটের প্রচারাভিযানের একটি স্লোগানের কথা উল্লেখ করে হ্যারিস বলেন, তারা ‘কঠিন কাজ’ চালিয়ে যাবেন, কারণ ‘কঠিন কাজই ভালো কাজ’। স্বাধীনতাকে ‘সমুন্নত রাখতে হবে’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। হ্যারিস বলেছেন, আমেরিকা আমরা কখনোই গণতন্ত্রের জন্য, আইনের শাসনের জন্য, সাম্য ও ন্যায়বিচারের জন্য এবং অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই ছেড়ে দেব না। এগুলোকে সম্মান করতে হবে ও সমুন্নত রাখতে হবে।

আমরা ভোটকেন্দ্রে, আদালতে এবং পাবলিক স্কোয়ারে এই লড়াই চালিয়ে যাব। হ্যারিস নারীর স্বাধীনতার জন্য লড়াই করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তার পরাজয় সত্ত্বেও, তিনি যে ইস্যুতে এতোদিন প্রচারণা চালিয়েছেন তার জন্য তার লড়াই বন্ধ হবে না। তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই এমন ভবিষ্যতের জন্য লড়াই বাদ দেব না যেখানে আমেরিকানরা তাদের স্বপ্ন, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং আকাঙ্খাগুলো পূরণ করতে পারে, যেখানে আমেরিকার নারীদের তাদের নিজের শরীরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা থাকবে এবং তাদের কী করতে হবে তা সরকার বলে দেবে না।’ কমালা বলেন, আমি এই নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিচ্ছি। কিন্তু আমি লড়াই ছাড়ছি না। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে, আমরা কোনো প্রেসিডেন্ট বা দলের প্রতি নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রতি আনুগত্য এবং আমাদের বিবেক এবং আমাদের ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য করি।’ এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন কমালা। তিনি বলেন, ‘আমি জানি লোকেরা এই মুহূর্তে বিভিন্ন ধরনের আবেগ অনুভব করছে। আমি সেটি বুঝতেও পেরেছি। তবে আমাদের অবশ্যই এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে হবে।’ এ সময় তিনি জানান, তিনি ট্রাম্পের সাথে কথা বলেছেন এবং তার বিজয়ের জন্য তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের’ প্রক্রিয়ায় তারা নিয়োজিত হবেন এবং সেই প্রক্রিয়ায় তিনি সাহায্যও করবে। হ্যারিস বলেন, ‘গণতন্ত্রের একটি মৌলিক নীতি’ হলো ফলাফল মেনে নেয়া। এটি গণতন্ত্রকে স্বৈরাচার থেকে আলাদা করে।