জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

হেনস্তার শিকার হওয়া দেশের সাধারণ মানুষের কাছে পার্লামেন্টে ক্ষমা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুকসন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা যাতে আর কখনো না ঘটে, সেদিকে নজর দেয়া হবে। যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্ত হবে। খবর আল-জাজিরার। গত মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্ট কানায় কানায় ভর্তি ছিল। গ্যালারিতে বসেছিল অসংখ্য সাধারণ মানুষ। যাদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করেছে, আশ্রয়হীন হয়ে অথবা মানসিক সহায়তার প্রয়োজনে রাষ্ট্র বা চার্চের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে তারা হেনস্তার শিকার হয়েছে। তাদের ওপর অত্যাচার হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের সরকার এ অভিযোগ নিয়ে একটি কমিশন গঠন করেছিল। কমিশনের রিপোর্টে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন অত্যাচার বা হেনস্তার শিকার হয়েছে। এরপরই পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুকসন নিজের এবং সাবেক সরকারের তরফ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। যারা এ অভিযোগ করেছিল, তাদের অধিকাংশই নিউজিল্যান্ডের জনজাতি গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।

১৯৫০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেছে কমিশন। এতে বলা হয়েছে, অন্তত ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ অত্যাচার ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে অসংখ্য শিশুও আছে। মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে তাদের ওপর অত্যাচার হয়েছে। বহু শিশু সরাসরি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, সরকারি ও চার্চের প্রতিষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটার ফলে তারা সরাসরি অভিযোগ জানাতেও পারেনি সব সময়। কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বহু শিশুকে সম্পূর্ণ অকারণে তাদের মায়েদের থেকে আলাদা করে দেয়া হয়েছে জোর করে। শিশুদের অন্য লোকের কাছে দত্তক হিসেবে পাঠানো হয়েছে। শিশু ও নারীদের ওপর যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়েছে। কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, মূলত বর্ণবাদের কারণেই এ অত্যাচার চালানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে নিউজিল্যান্ডের মাওরি জনজাতির মানুষ। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কমিশনের এই রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দোষীদের চিহ্নিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর কখনো না ঘটে, তার ব্যবস্থা করা হবে।