মোদি-আদানি দুজনেই দুর্নীতিগ্রস্ত

সংবাদ সম্মেলনে রাহুলের অভিযোগ

প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের এক আদালতে ঘুষকাণ্ডে অভিযুক্ত হওয়ার পর ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। আজ বৃহস্পতিবার কংগ্রেস সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে ওই দাবি জানানোর পাশাপাশি তিনি বলেন, আদানির হয়ে আগাগোড়া তাঁবেদারি করে চলা ও দুর্নীতির সঙ্গী ভারতের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘সেবি’-এর প্রধান মাধবী পুরী বুচের বিরুদ্ধেও দ্রুত তদন্ত শুরু করা দরকার। রাহুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও গৌতম আদানি দুজনেই দুর্নীতিগ্রস্ত। এখনই আদানিকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। কিন্তু আদানিকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা মোদির নেই। কারণ, তিনি নিজেই রয়েছেন আদানির নিয়ন্ত্রণে। রাহুল বলেন, আদানিকে সব সময় সুরক্ষা দিয়ে চলেছেন নরেন্দ্র মোদিই।’

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি অফিস থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে গৌতম আদানিসহ অন্য কয়েকজনকে কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। অভিযোগ, এক সৌর শক্তি প্রকল্প পেতে ভারতীয় সরকারি কর্তাদের তারা ২ হাজার ২৩৭ কোটি রুপি ঘুষ দিয়েছিলেন। প্রকল্পের বিনিয়োগকারী ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে তারা এই তথ্য গোপন করেছিলেন। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বন্ড মারফত লগ্নির চেষ্টা করেছিলেন। এবং সে সময় ঘুষের বিষয়টি চেপে গিয়েছিলেন। গৌতম আদানি ছাড়াও ঘুষকাণ্ডে অভিযুক্ত হয়েছেন তার ভাইপো সাগর আদানি। আর আছেন আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের সিইও বিনীত জৈন, রঞ্জিত গুপ্ত, রুপেশ আগরওয়াল, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক সিরিল ক্যাবানেস, সৌরভ আগরওয়াল ও দীপক মালহোত্রা। গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রুকলিন ফেডারেল কোর্ট গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। আদানির বিরুদ্ধে রাহুল অনেকদিন ধরেই দুর্নীতির অভিযোগ করে আসছেন। ভারতীয় সংসদেও তিনি বারবার মোদি-আদানি সম্পর্ক নিয়ে সরব হয়েছেন। গতকাল বুধবার শেষ রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই খবর আসার পর আজ বৃহস্পতিবারই রাহুল কংগ্রেসের সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করেন। কংগ্রেস নেতা বলেন, এতদিন ধরে যা তারা বলে আসছেন, আজ আরেকবার তা সত্যি প্রমাণিত হলো। রাহুল বলেন, গৌতম আদানি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশেরই আইন ভেঙেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে অভিযুক্ত হয়েছেন।

এরপরও উনি কীভাবে মুক্ত থাকেন? এ দেশে ১০-১৫ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হন। অথচ হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করেও গৌতম আদানির কিছু হয় না। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নিজেই আদানির দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। রাহুল বলেন, মোদি ‘এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়’ (একত্রে থাকলে নিরাপদ থাকবে) মন্ত্রে বিশ্বাসী। আদানির বিরুদ্ধে তদন্ত হলেই মোদির নাম আসবে। তাই তদন্ত হয় না। গোটা বিজেপি দলটাই চলছে আদানির টাকায়। আজ আরেকবার প্রমাণিত হলো, মোদি দুর্নীতিগ্রস্ত। আদানি তার কাঁধের ঝোলা। এর আগে রাহুল গান্ধী সংসদে মোদি-আদানি সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কায় আদানির হয়ে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ করেছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, বাংলাদেশে তদন্ত শুরু হয়েছে। শ্রীলঙ্কা, কেনিয়ায়ও হচ্ছে। মোদি যে দেশ সফর করেন, সেখানেই আদানি গোষ্ঠী প্রকল্পের বরাত পায়। এবং দেশের মান সম্মান ডোবান। আদানি গোষ্ঠী অবশ্য গতকাল বৃহস্পতিবার ‘এক্স’ মারফত বলেছে, আদানি গ্রিন এনার্জির পরিচালকের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আদানি গোষ্ঠী সব সময় আইন মেনে চলেছে। সব সময় তারা সব বিষয়ে স্বচ্ছ। নিয়ন্ত্রণ বিধিও সর্বদা মেনে চলে। এই বিষয়ে আদানি গোষ্ঠী সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেবে।