সব বাধা কাটিয়ে অবশেষে হামাসের সঙ্গে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা। ছয় ঘণ্টার বেশি সময় চলা বৈঠকের পর গতকাল ভোরে এই অনুমোদন হয় বলে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ে নিজেদের কব্জায় থাকা ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেবে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। এর বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে ৭৩৫ জনকে প্রথম দফায় ছেড়ে দেবে দেশটির সরকার। এদের মধ্যে আজ রোববার প্রথম ছাড়া পাবে ৯৫ জন ফিলিস্তিনি। খবর সিএনএন, টাইমস অব ইসরায়েল ও রয়টার্সের। ফলে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ রোববার থেকেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনটি ধাপে অন্তর্ভুক্ত যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপটি ছয় সপ্তাহের তথা ৪২ দিনের একটি প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়কালে ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়া হবে। যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ রয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ৭৩৫ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে দেশটি। গতকাল শনিবার ভোরে এক বিবৃতিতে ইসরাইলের বিচার মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। ইসরায়েলের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় শনিবার হিব্রু ভাষায় ৭৩৫ ফিলিস্তিনি বন্দির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। প্রথম ধাপে এ সব ফিলিস্তিনি বন্দিরা মুক্তি পাবেন। এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠকের পর গতকাল শনিবার সকালে ইসরায়েল সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে। এতে আরো বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সরকার একটি যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি চুক্তি অনুমোদন করেছে। এর ফলে রোববার থেকে চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছে।
ইসরায়েলের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন আজ রোববার দেশটির বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ৯৫ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়া হবে। এদের মধ্যে ৬৯ জন নারী, ১৬ জন পুরুষ এবং ১০ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ৯৫ জনের নামও প্রকাশ করেছে বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়। চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকরের বিষয়ে আলোচনা প্রথম ধাপের ১৬তম দিনের মধ্যে শুরু হবে। সেখানে অবশিষ্ট সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। তৃতীয় ধাপে অবশিষ্ট মৃতদেহগুলোর ফেরত দেয়া এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরুর কথা রয়েছে। এই কাজ মিশর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় টানা ১৫ মাসের সংঘাতের পর ১৫ জানুয়ারি গাজায় দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে একমত হয় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।