পার্সটুডে-ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সিনিয়র উপদেষ্টা বলেছেন, আমেরিকা যদি কোনো ভুল করে, তাহলে ইরান জনগণের চাপে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে এগিয়ে যেতে বাধ্য হবে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার শত্রুতাপূর্ণ এবং উচ্চাভিলাষী দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী ইরানের বিরুদ্ধে যথারীতি হুমকি দিয়েছেন। তার ওই সব হুমকি বিচিত্র প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছে। পার্সটুডে আরও জানিয়েছে, ইসলামী বিপ্লবের নেতার উপদেষ্টা আলী লারিজানি গত সোমবার রাতে ইরানি টিভির একটি নিউজ টকশোতে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে সামরিক পদক্ষেপ পরিণতিহীন নয়। তিনি বলেন, ইসলামী বিপ্লবের নেতার ফতোয়া হল পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত নয়। কিন্তু আমেরিকা বা ইসরাইল যদি পারমাণবিক অস্ত্রের অজুহাতে ইরানে বোমা হামলা চালায়, তাহলে ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দিকে এগিয়ে যেতে বাধ্য হবে। ইরানের নীতি নির্ধারণী পরিষদের এই সদস্য বলেছেন, বোমা হামলার মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, ইরানের পারমাণবিক প্রযুক্তি এমনভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে যে, বোমা হামলার ঘটনা ঘটলে, এমনকি বিলম্বও লক্ষ্য করা যাবে না। ইরান প্রসঙ্গে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য সম্পর্কে লারিজানি আরও বলেন, বেশিরভাগ রাজনীতিবিদ ট্রাম্পের কথাকে একধরনের বাগ্মীতা বলে মনে করেন। বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পের আচরণ একটি ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। রাশিয়া এবং কানাডার জন্য তিনি একটি রেখা টেনেছিলেন কিন্তু উল্লেখযোগ্য কিছুই ঘটে নি।
ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতার উপদেষ্টা বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দ্বিধায় পরমাণু সমঝোতার অঙ্গিকারগুলোকে পদদলিত করেছে। তিনি বলেন, ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা পরমাণু সমঝোতাকে ভালো চুক্তি বলে মনে করেন নি, কারণ আমেরিকায় একজন প্রেসিডেন্ট সহজেই ওই চুক্তির বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করেছেন, অন্যদিকে ইরান সমঝোতার অঙ্গিকারগুলো পূরণ করেছে। ইরানের নীতি নির্ধারণী পরিষদের এই সদস্য স্পষ্ট করে বলেছেন, পরোক্ষ আলোচনা হলো অন্য পক্ষের দাবি এবং ছাড়গুলো সম্পর্কে ধারনা নেয়া। লারিজানি বলেন, ইরান বৃহৎ শক্তিগুলোর মাঝে একটি বিশেষ অবস্থান পেয়েছে, এবং বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশ ইরানের সঙ্গে একটি স্বাধীন সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়, কিন্তু আমেরিকার চাপের কারণে তারা তাদের অবস্থানে অটল থাকতে পারে না। ইরানের নীতি নির্ধারণী পরিষদের এই সদস্য আরও বলেন, আমেরিকা ছাড়া ইসরাইল এ অঞ্চলে কিছুই করতে পারবে না। তিনি বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল যুদ্ধবিরতি ইস্যুকে সম্পূর্ণরূপে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। সমস্ত দেশ জানে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে ইসরাইলের অঙ্গিকারের ওপর তেমন কোনো আস্থা নেই। ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতার উপদেষ্টা মনে করেন, ইসরাইলি হামলা থেকে মুক্তির সমাধান হলো সংগ্রাম। ইয়েমেনে মার্কিন হামলার নিন্দা করে তিনি বলেন, আমেরিকানদের যদি একটুও বুদ্ধি থাকত, তাহলে তারা ইয়েমেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতো না।