ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ওপর সাম্প্রতিক মার্কিন হামলাকে ‘ধ্বংসাত্মক’ বলে দাবি করলেও বাস্তবে এই হামলাগুলো প্রত্যাশিত সাফল্য আনেনি এমনটাই জানিয়েছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, হুথিদের ভূগর্ভস্থ অস্ত্রাগারগুলোকে লক্ষ্য করে সফলভাবে হামলা চালানো যাচ্ছে না। যদিও হামলার মাত্রা ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে বেড়ে গেছে, তবে এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
ইরান-সমর্থিত পরিকল্পনার জোরে টিকে আছে হুথিরা: প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান-সমর্থিত হুথি গোষ্ঠী তাদের ভূগর্ভস্থ বাংকারগুলো আরও শক্তিশালী করেছে, যা হামলা প্রতিরোধে কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে। মার্কিন কংগ্রেস এবং মিত্র দেশগুলোর তিন কর্মকর্তা এনওয়াইটিকে জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে হুথিরা তাদের সামরিক সক্ষমতা রক্ষা করছে।
ব্যয় বেড়েই চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের: হুথি হুমকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে জানানো হয়েছে, যা এখনও কেবল গোলাবারুদের খরচ। এতে যুক্ত হয়নি জাহাজ, দুইটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার এবং বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েনের খরচ। সূত্র জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহ নাগাদ এই ব্যয় ১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।
ইসরাইল রক্ষা এবং মার্কিন সীমাবদ্ধতা: ইসরাইলকে হুথিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্র থাড ব্যবস্থার ব্যবহার করছে, যার প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে ব্যয় হয় প্রায় ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন ডলার। যদিও হুথিদের মোকাবিলায় অতীতে ইসরাইলি বিমানবাহিনী সফলভাবে হামলা চালিয়েছিল, তবে এখন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে হুথিদের ওপর হামলা না চালাতে বলেছে। ওয়াশিংটনের ধারণা, তাদের বিমানবাহী জাহাজ থেকে পরিচালিত অব্যাহত বিমান হামলা হুথিদের দমন করতে বেশি কার্যকর হবে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মত: বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে হুথি হুমকি দমনে কৌশলগতভাবে পিছিয়ে পড়েছে। হামলার মাত্রা বাড়লেও লক্ষ্যবস্তুতে কার্যকর আঘাত হানতে না পারার কারণে শুধু ব্যয়ই বেড়েছে, কাঙ্ক্ষিত ফল আসেনি। একইসঙ্গে, ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠী মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।