ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ২৬ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বলা হচ্ছে, এটি প্রায় দুই দশকের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। ফলে এই হামলার ঘটনা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, কাশ্মীরের পহেলগাম জেলার মনোরম হিমালয় অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে এই হামলার ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল অসীম মুনির কাশ্মীরকে ইসলামাবাদের ‘জুগুলার ভেইন’ (গলা বা ঘাড়-সংক্রান্ত শিরা) হিসেবে বর্ণনা করার কয়েকদিনের মধ্যেই এ হামলার ঘটনা ঘটল বলে দাবি করছে ভারতীয় বিভিন্ন সূত্র।
ভারতের একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ইকোনমিক টাইমস বলছে, পাক সেনাপ্রধানের বক্তব্য এবং মুসলিম ও হিন্দুদের প্রতি ‘বিভেদমূলক আচরণ’-এর ওপর তার আলোকপাত ‘জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে উৎসাহিত করে থাকতে পারে’। গোয়েন্দা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ধারণা করা হচ্ছে, আক্রমণকারীরা হামলার কয়েকদিন আগে এসে (কাশ্মীরে) গোয়েন্দা তল্লাশি শুরু করেছিল এবং সুযোগ পেলেই আক্রমণ চালায়।’ কী বলেছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান? গত ১৭ এপ্রিল এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৬ এপ্রিল ইসলামাবাদে বিভিন্ন দেশে কর্মরত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে জেনারেল মুনির কাশ্মীর ও বেলুচিস্তান প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর হলো ইসলামাবাদের জুগুলার ভেইন। তাই পাকিস্তানিরা কখনও তাকে ভুলতে পারবে না।’ সভায় পাকিস্তানের সেনাপ্রধান অসীম মুনির পাকিস্তানের ইতিহাস সবাইকে মনে করিয়ে দেন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সেই ইতিহাস ছড়িয়ে দিতে বলেন। ভারত ও পাকিস্তান যে আলাদা এবং স্বতন্ত্র সে বিষয়টি মনে করিয়ে দেন আসিম। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমাদের দেশের রাষ্ট্রদূতদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়- তারা একটি দারুণ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক। আপনাদের অবশ্যই সন্তানদের কাছে পাকিস্তানের গল্প বলা উচিত। আমাদের পূর্বপুরুষরা ভাবতেন যে, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা হিন্দুদের থেকে আলাদা। আমাদের ধর্ম, আমাদের রীতিনীতি, ঐতিহ্য, চিন্তাভাবনা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা পৃথক। এটিই ছিল দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তি।’