সুরা ইখলাসের ফজিলত

আবরার নাঈম

প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

আল-কোরআন। মানবজীবনের সংবিধান। হক-বাতিলের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টিকারী। দোজাহানে সফলতার চাবিকাঠি। পবিত্র কোরআনের বহু জায়গায় আল্লাহ তায়ালা সুনিপুণভাবে তার নিজ সত্তার পরিচয় তুলে ধরেছেন। যেমন- আয়াতুল কোরসি, সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত। তেমনি সুরা ইখলাসেও তিনি তার একত্ববাদ, মহত্ব ও বড়ত্বের ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা নবীজিকে (সা.) সম্বোধন করে বলেন, ‘আপনি বলুন- ১. তিনিই আল্লাহ, একক-অদ্বিতীয়; ২. আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন; ৩. তাঁর কোনো সন্তান নেই এবং তিনিও কারো সন্তান নন; ৪. তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সুরা ইখলাস পাঠের বহু গুরুত্ব ও ফজিলত। সুরা ইখলাস কোরআনের তিন ভাগের এক ভাগ- হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে- তিনি বলেন, নবী (সা.) তাঁর সাহাবিদের বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ কি এক রাতে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করা সাধ্যাতীত মনে করো?’ এ প্রশ্ন তাদের জন্য কঠিন ছিল। এরপর তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের মধ্যে কার সাধ্য আছে যে এটি পারবে? তখন তিনি বললেন, ‘কুলহু ওয়াল্লাহু আহাদ’ অর্থাৎ সুরা ইখলাস কোরআনের তিন ভাগের এক ভাগ।’ (বুখারি-৫০১৫) এ সম্পর্কে আরো একটি হাদিস। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কুলহু ওয়াল্লাহু আহাদ’ কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।’ (তিরমিজি-২৮৯৯) আল্লাহর ভালোবাসা লাভ : সহিহ বুখারির কিতাবুত তাওহিদে হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে- আল্লাহর রাসুল (সা.) এক সাহাবির নেতৃত্বে একদল সেনাবাহিনী প্রেরণ করলেন। তারা ফিরে এসে নবীজি (সা.)-কে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! যাকে আপনি আমাদের নেতা মনোনীত করেছেন, তিনি প্রতি সালাতে কিরাতের শেষে সুরা ইখলাস পাঠ করতেন। রাসুল (সা.) তাদেরকে বললেন, ‘সে কেন এমন করত তা কি তোমরা তাকে জিজ্ঞেস করেছ?’ তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি উত্তরে বলেন, এ সুরায় আল্লাহর গুণাবলি বর্ণনা করা হয়েছে, এ কারণে এ সুরা পড়তে আমি খুব ভালোবাসি। এ কথা শুনে রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাকে জানিয়ে দাও, আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন।’ (ফাতহুল বারি-১৩/৩৬০)

সুরা ইখলাস পাঠে জান্নাত : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে আসছিলাম। তখন তিনি এক ব্যক্তিকে ‘কুলহু ওয়াল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস সামাদ’ পাঠ করতে শুনলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘ওয়াজিব (অবধারিত) হয়ে গেছে।’ আমি প্রশ্ন করলাম, কী ওয়াজিব হয়ে গেছে? তিনি বললেন, ‘জান্নাত’। (তিরমিজি-২৮৯৭) লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া আরাবিয়া মাখযানুল উলুম, ময়মনসিংহ সদর।