ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সমৃদ্ধ অর্থনীতি সুষ্ঠু জীবনের সোপান

গোলাম রাজ্জাক কাসেমী
সমৃদ্ধ অর্থনীতি সুষ্ঠু জীবনের সোপান

মানুষের অপরাধপ্রবণতা যদি আল্লাহর ভয়ে ও রাসুল (সা.)-এর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে সংশোধিত না হয়, তাহলে সরকার অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ন্যূনতম ব্যবস্থা হচ্ছে, যাদের হাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ-সম্পদ রয়েছে, তাদের সেসব সম্পত্তি বৈধপথে অর্জিত হয়েছে কি-না, তা নির্ণয় করা। ইসলামি সরকার আইন প্রয়োগ করে অবৈধ উপার্জনের সব পথ বন্ধ করে দিতে পারে; পারে সব ধরনের অনাচারের উচ্ছেদ করতে। এ উপায়েই সুদণ্ডঘুষ, মুনাফাখোরি, মজুতদারি, চোরাচালান, কালোবাজারি, পণ্যদ্রব্য আত্মসাৎ, সব ধরনের জুয়া, হারামসামগ্রীর উৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রচলিত সবধরনের অসাধুতা সমূলে নির্মূল করা সম্ভব। রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপের মাধ্যমেই জাকাত আদায়, বিলি-বণ্টন ও ব্যবস্থাপনা এবং উত্তরাধিকার বা মিরাসি আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন, ইসলামি শ্রমনীতির রূপদান ইত্যাদি অর্থনৈতিক কার্যক্রম গ্রহণ সম্ভব। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যা ব্যক্তির হাতে ছেড়ে দেয়া উত্তম; কিন্তু তার লাগাম রাষ্ট্রের হাতে থাকাই বাঞ্ছনীয়। যেমন- উৎপাদন, বণ্টন ও বিনিয়োগ। এগুলোর যথাযথ তত্ত্বাবধান না হলে সমাজে ধনী-গরিবের বৈষম্য বৃদ্ধি পাবে, মুষ্টিমেয় লোকেই সব সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ফেলবে। ফলে সাধারণ মানুষের দুর্গতির অন্ত থাকবে না। আর এ উদ্দেশ্যেই মহানবী (সা.) হিসবাহ নামে একটি দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দপ্তরটির কাজ ছিল অবৈধ উপায়ে আয় রোধ করা, এ কাজে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা। অবৈধভাবে গ্রহণ করে থাকলে তা মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে বায়তুল মালে জমা দেয়া।

ঘুষ আদান-প্রদান নিষিদ্ধ

অবৈধ আয়ের উদ্দেশ্যে জনগণের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জুলুম করা হয়। হয়রানি করে বা কৌশলে প্রতারণা করে অথবা বাধ্য করে লোকদের কাছ থেকে ব্যক্তিবিশেষ বা অনেক সময় শ্রেণিবিশেষ উপার্জন করে থাকে। এতে জনগণ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি সমাজে সৃষ্টি হয় অসন্তোষ। দরিদ্র ও সাধারণ লোক তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। উপরন্তু কলহ, বিশৃঙ্খলা, বিদ্বেষ ও বিভেদের পথ প্রশস্ত হয়। অনেক সময় ব্যক্তিবিশেষও উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য অবৈধ অর্থ ব্যয় করে থাকে। যেমন- ঘুষ। বিশ্বের সর্বত্রই এটা সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। বহু দেশে ঘুষ উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে আইন প্রণয়ন করা হলেও পরিতাপের বিষয় হলো, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকেই ঘুষ নিতে দেখা গেছে। ঘুষ আজ অন্য আট-দশটা উপায়ে আয়ের মতোই খুব সহজ ও স্বাভাবিক বলে স্বীকৃত হচ্ছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কেউই এটিকে ঘুষ বলতে চান না। তারা বরং এটিকে ৫ শতাংশ, ১০ শতাংশ অফিস খরচ, বখশিশ, চা-মিষ্টি, হাদিয়া- এসব নামে অভিহিত করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। একেকটি অফিস বা প্রতিষ্ঠানে একেক নামে এটি পরিচিত। অবস্থা দেখে মনে হয়, নাম বদল করে তারা এ অপরাধকে কিছুটা হালকাভাবে দেখতে চান। এ জন্যই ওমর বিন আবদুল আজিজ (রহ.) বলেছিলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর যুগে উপঢৌকন হাদিয়া ছিল; আর এখন তা ঘুষ।’ (বোখারি, হিবা ও তার ফজিলত অধ্যায়)।

হাদিসে বর্ণিত একটি ঘটনার দিকে লক্ষ্য করলে এ বিষয়ে সংশয় দূর হয়ে যাবে। আবু হুমাইদ সাঈদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, নবীজি (সা.) আজদ গোত্রের ইবনু উতবিয়া নামের এক লোককে সদকা সংগ্রহের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন। তিনি ফিরে এসে বললেন, ‘এগুলো আপনাদের, আর এগুলো আমাকে হাদিয়া দেয়া হয়েছে।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘সে তার বাবার ঘরে কিংবা তার মায়ের ঘরে কেন বসে থাকল না? তখন সে দেখতে পেত, তাকে কেউ হাদিয়া দিত কি-না? যার হাতে আমার প্রাণ, সেই সত্তার কসম! সদকার মাল হতে স্বল্প পরিমাণও যে আত্মসাৎ করবে, সে তা কাঁধে করে কেয়ামত দিবসে উপস্থিত হবে। সেটা উট হলে তার আওয়াজ করবে, আর গাভী হলে হাম্বা হাম্বা রব করবে, আর বকরি হলে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতে থাকবে।’ এরপর রাসুল (সা.) তার দু’হাত এ পরিমাণ তুললেন যে, আমরা তার দুই বগলের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। তিনি তিনবার বললেন, ‘হে আল্লাহ?! আমি কি পৌঁছে দিয়েছি। হে আল্লাহ? আমি কি পৌঁছে দিয়েছি?’ (বোখারি : ২৫৯৭)।

এ হাদিস থেকে এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায়, ঘুষকে যত চটকদার নামেই নামকরণ করা হোক কিংবা জনগণ খুশি হয়ে প্রদান করুক অথবা কাজের বিনিময় হিসেবে দিয়ে থাকুক, অর্পিত দায়িত্ব পালনের বিনিময়ে বেতন-ভাতা বাদে অন্যের কাছ থেকে যে অতিরিক্ত অর্থ নিজের জন্য গ্রহণ করা হয়, তার সবই ঘুষ এবং অন্যায়। এতে একপক্ষ অধিক লাভবান হয় এবং অন্যপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়; যা ইসলাম ও সাধারণ বিবেক কোনোটিই সমর্থন করে না। যারা ঘুষ নেয় বা দেয়, তাদের উদ্দেশ্যে রাসুল (সা.) সতর্ক করে বলেন, ‘ঘুষ গ্রহণকারী ও ঘুষ প্রদানকারী উভয়ের ওপর আল্লাহর অভিসম্পাত।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৩১৩)।

অপচয় রোধ ও সম্পদের যথাযথ ব্যবহার

ধন-সম্পদের সঠিক ব্যবহার এবং এর যথাযথ আদান-প্রদানের মাধ্যমে সমাজের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়; দেশ ও সমাজের সমৃদ্ধি বাস্তবায়িত হয়। ধন-সম্পদ আল্লাহর দান। তা বিকশিত ও সমৃদ্ধ না করে নষ্ট করার অধিকার নেই। কারণ, এ সম্পদ একদিকে যেমন আল্লাহর নেয়ামত, আবার তা আমাদের হাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে আমানতও। তাই এর যথাযথ ব্যবহার না করলে, অযথা-অপ্রয়োজনে তা নষ্ট করলে, অপচয় করে বেড়ালে, এ আমানতের খেয়ানতকারী হিসেবে জবাবদিহিতার মুখেও পড়তে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য তিনটি বিষয়কে অপছন্দ করেন- ১. অনুমান করে কথা বলা, ২. সম্পদ নষ্ট করা, ৩. অধিক প্রশ্ন করা।’ (বোখারি : ১৪৭৭)। সম্পদ নষ্ট করা আল্লাহর কাছে একটি ঘৃণ্য বিষয়। তাই তো আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে বনি আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, পানাহার কর; কিন্তু অপব্যয় কোরো না। তিনি অপব্যয়ীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আরাফ : ৩১)। অপর আয়াতে বলেন, ‘তোমাদের যা দান করেছি, তা থেকে ভালো ও হালাল বস্তু আহার কর এবং এ বিষয়ে সীমালঙ্ঘন কোরো না। করলে তোমাদের ওপর আমার ক্রোধ অবধারিত। আর যার ওপর আমার ক্রোধ অবধারিত, সে তো ধ্বংস হয়ে যায়।’ (সুরা তহা : ৮১)। উল্লেখ্য, খাবারের অবশিষ্ট অংশ ফেলে দেওয়া ইদানিং তথাকথিত সুশীল সমাজের ভদ্রতা (?) হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাবারের উচ্ছিষ্ট নষ্ট করা যেন ফ্যাশনে রূপ নিয়েছে। অথচ অতিরিক্ত সম্পদ বা খাদ্যটুকু অপচয় না করে গরিবের শূন্য হাঁড়িতে ঢেলে দিলে একদিকে যেমন অপব্যয়ের গোনাহ থেকে বাঁচা যায়, অন্যদিকে শূন্য হাঁড়িগুলো প্রাণ ফিরে পায়। এ জন্য কোরআনুল কারিমে মিতব্যয়ীদের ‘রহমানের বান্দা’ হিসেবে অভিহিত করার পাশাপাশি অপচয়কারীদের শয়তানের ভাই হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনকে তার হক দিয়ে দাও এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও। তবে কিছুতেই অপব্যয় কোরো না। নিশ্চয়ই অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ২৬-২৭)।

দুঃখজনক হলো, কিছু মানুষ ‘রহমানের বান্দা’ হওয়ার চেয়ে শয়তানের ভাই হওয়াটাকেই বেছে নিচ্ছে। অপচয় এখন আমাদের সমাজের আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষের এখনও নিয়মিত দু’বেলা খাবার জোটে না, অন্যদিকে পৃথিবীর মোট উৎপাদিত খাদ্যের এক-তৃতীয়াংশই অপচয় হয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বলছে, বিশ্বে বছরে প্রায় ১৩০ কোটি টন খাদ্য অপচয় হয়; যা মোট উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। অপচয় হওয়া বিপুল পরিমাণ এ খাবারের এক-চতুর্থাংশ বাঁচানো গেলে ৮৭ কোটি মানুষের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব। খাদ্য অপচয়ের কারণে বছরে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি ডলার। বিশ্বে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটায় কোটি কোটি মানুষ। কিন্তু থেমে নেই উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্য অপচয়। উন্নত দেশগুলোতে বছরে মাথাপিছু খাবারের উৎপাদনের হার ৯০০ কেজি। এর মধ্যে ব্যক্তিপর্যায়ে পশ্চিমা দেশে মাথাপিছু অপচয়ের হার ৯৫ থেকে ১১৫ কেজি। বিপণন পর্যায়ে পণ্যের মান বিবেচনা করতেও নষ্ট হয় প্রচুর খাদ্য। বছরে শিল্পোন্নত দেশে ৬৮ হাজার কোটি, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে খাবার অপচয়ের বাজার মূল্য ৩১ হাজার কোটি ডলার।

উন্নয়নশীল দেশে জমি থেকে ফসল সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত পর্যায়ে ৪০ শতাংশ খাদ্য নষ্ট হয়। আর শিল্পোন্নত দেশে ৪০ শতাংশ খাদ্য নষ্ট হয় বিপণন ও ভোক্তা পর্যায়ে। ফসল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পর্যায়ে নষ্ট হওয়া খাবার কৃষকের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বাড়ায়। সবশেষে ভোক্তা পর্যায়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। এফএওর মহাপরিচালক হোসে গ্রাসিয়ানো ডি সিলভা জানান, অপচয় হওয়া খাদ্যের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। ভোক্তারা প্রতিদিন, বিশেষ করে ধনী দেশগুলোতে যে বিপুল পরিমাণে খাদ্য নষ্ট করেন, তা পুরো আফ্রিকার সাবসাহারা অঞ্চলে উৎপাদিত খাদ্যের সমান। খাদ্য নিরাপত্তা এবং বিশ্বকে টেকসই করার ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব ব্যাপক। তিনি বলেন, এই খাদ্য অপচয় যদি কমানো সম্ভব হয়, তাহলে খাদ্যের সরবরাহ বাড়বে, উৎপাদন বাড়াতে হবে না এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর চাপ কমবে। বিশ্বের প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর খাদ্য অপচয়ের যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, সেই প্রবণতাকে অবশ্যই বিপরীতমুখী করতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ডি সিলভা বলেন, বিশ্বের মোট খাদ্যের এক-তৃতীয়াংশই নষ্ট বা অপচয় হয়। কারণ, আমাদের এমন সব আচরণ যথাযথ নয়। অথচ ওই একই সময়ে বিশ্বে দৈনিক ১৭ কোটি লোক ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিন কাটান। তিনি জানান, বিশ্বে যে পরিমাণে খাদ্য অপচয় হয়, তা সুইজারল্যান্ডের সারা বছরের মোট জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপির সমান। বিশ্বে যেসব মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্য নষ্ট হয় এবং অপচয় হওয়া খাদ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য ব্যয় এ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত নয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থার কর্মকর্তা রবার্ট ভ্যান অথারিভজক বলেন, প্রযুক্তি, অর্থনীতি, মানুষের অভ্যাস ও বিভিন্ন কারণে মানুষের খাদ্যের অপচয় হয়। আর খাদ্যের অপচয় হলে তার উৎপাদনে ব্যবহৃত পানি, জমির শক্তি ও অর্থের অপচয় ঘটে। কৃষকসহ বেসরকারি পর্যায়ে সচেতন হলে প্রচুর পরিমাণ খাদ্য অপচয় রোধ করা সম্ভব। ইমপ্যাক্টস অন ন্যাচারাল রিসোর্সেস শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর যে পরিমাণ খাদ্য উৎপাদনের পর তা না খেয়ে নষ্ট করা হয়, তা পচে যাওয়ার পর তা থেকে যে পরিমাণ তরল পর্দাথ তৈরি হতে পারে, তা ভলগা নদীর পানিপ্রবাহের সমান।

লেখক : মুহাদ্দিস ও বিভাগীয় প্রধান, আরবি ভাষা ও সাহিত্য, মদিনাতুল উলুম মাহমুদিয়া, নারায়ণগঞ্জ

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত