সুদের কুফল
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
জাকারিয়া মাহমুদ
১. অর্থসংকট, আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও ঘৃণা। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহতায়ালা (সুদ হালাল ধারণাকারী) প্রত্যেক অকৃতজ্ঞ (এবং তা ভক্ষণকারী) অপরাধীকে ভালোবাসেন না।’ (সুরা বাকারা : ২৭৬)।
২. সুদখোরের বিরুদ্ধে আল্লাহতায়ালা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যদি তোমরা সুদ পরিহার না কর, তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও।’ (সুরা বাকারা : ২৪)।
৩. সুদ মানুষের মধ্যে নির্মমতা, সংকীর্ণতা, স্বার্থপরতা, অকৃপণতা ও নৃশংসতার জন্ম দেয়।
৪. সুদ চরিত্র গঠনে প্রতিবন্ধক। মানুষকে করে কর্মবিমুখ। পরস্পরে উদার নয়, হয় অত্যাচারী।
৫. সুদ মানুষের হিতাহিত জ্ঞান হ্রাস করে ও দুশ্চিন্তা বৃদ্ধি করে।
৬. সুদ সীমাহীন লালসার জন্ম দেয়। বানায় ঈর্ষাকাতর। ফলে জ্ঞানশূন্য হয়ে ভালো-মন্দের পার্থক্য যোগ্যতা হারায়।
৭. রাসুল (সা.)-এর পক্ষ থেকে সুদখোরের ওপর লানত বা অভিসম্পদ। তিনি সুদ দাতাণ্ডগ্রহীতা উভয়ের ওপর এ অভিসম্পাত করেছেন। (মুসলিম : ১০৬, ১৫৯৮; তিরমিজি : ১২০৬)।
৮. সুদখোর ভূতগ্রস্ত হয়ে হাশরের ময়দানে উঠবে। (সুরা বাকারা : ২৭৫)।
৯. কেয়ামতের দিন সুদখোর নিজ কৃতকর্মের ফল পুরোপুরি প্রাপ্ত হবে। এ বিষয়ে এতটুকু কমবেশ করা হবে না। (সুরা বাকারা : ২৮১)।
১০. জাহান্নাম হবে তার ঠিকানা। সেখানে সে সর্বদা অবস্থান করবে। (সুরা বাকারা : ২৭৫)।
১১. সুদখোরকে মৃত্যুর পর থেকে কেয়ামত পর্যন্ত বরজখি জীবনে আজাব দেয়া হবে। তার আজাব হবে- তাকে এমন নদীতে সাঁতার কাটতে হবে, যার পানি হবে রক্তের মতো লাল এবং তাতে তার ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হতে থাকবে। (বোখারি : ১৩৮৬)।
১২. মায়ের সঙ্গে জিনা করার গোনাহ নিয়ে কেয়ামতের দিন উঠবে। যেটা সুদের ৭৩টি, আরেক বর্ণনানুসারে ৭০ স্তরের সর্বনিম্ন স্তর। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ২২৭৪, মুসান্নাফে আবদির রাজ্জাক : ১৫৩৪৫)।
১৩. সুদের মাধ্যমে একটি দিরহাম অর্জন ৩৬ বার ব্যভিচার করার চেয়ে মারাত্মক। (মুসনাদে আহমদ : ২১৯৫৫৭)।
১৪. সুদখোরের পেট সাপে পরিপূর্ণ থাকবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, মেরাজের রাতে আমি এমন কিছু লোক দেখতে পেলাম, যাদের পেটগুলো বিশাল ঘরের মতো সামনের দিকে বেরিয়ে আছে। তা ছিল অসংখ্য সাপে পরিপূর্ণ। যেগুলো পেটের বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে জিবরাইল, এরা কারা?’ তিনি জবাবে দিলেন, ‘এরা সুদখোরের দল।’ (মুসনাদে আহমদ : ৮৬৪০)।