বিনিয়োগবান্ধব সাগরকন্যা কুয়াকাটা
হাবিবুর রহমান মিছবাহ
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
পর্যটন নগরী সাগরকন্যা কুয়াকাটা। একটি নাম, একটি ইতিহাস। অপরূপ লীলার প্রিয় মাতৃভূমির সৌন্দর্যের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ কুয়াকাটা। উপকূলীয় অঞ্চল হিসেবে পরিচিত এ কুয়াকাটাই এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। দেশের নামিদামি কোম্পানিগুলো কুয়াকাটায় বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে আরো আগেই। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যের মূলকেন্দ্রই বানিয়েছে কুয়াকাটা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে ব্যবসায়ীদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে এ পর্যটন নগরী। একসময় যেখানে থাকাণ্ডখাওয়ার সুব্যবস্থা ছিল না; ছিল না ভ্রমণস্পটগুলো ঘুরে দেখার যুৎসই যানবাহন। খাবার হোটেল ছিল দুষ্প্রাপ্য। সেখানে এখন উন্নত দেশের পর্যটনস্পটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যাবতীয় সুবিধা।
কুয়াকাটার অনন্যতা : কয়েকটি দেশে ভ্রমণ করেও কুয়াকাটার বারবিকিউ ও ফ্রাইয়ের সঙ্গে কোনো দেশের স্বাদ-ঘ্রাণ মেলানো যায় না। তাই কুয়াকাটার ফ্রাই বারবিকিউর স্বাদ নিতে একবার হলেও যেতে হয় সাগরকন্যার তীরে। বর্তমানে হোটেল, রিসোর্ট, মার্কেট, ইলিশের ব্যবসায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে ব্যবসায়িক মহল। ইলিশের সিজনে হাজার কোটি টাকার চালান হয় কুয়াকাটা থেকে। পাঁচতারকা মানের হোটেল রিসোর্টেও চলছে প্রতিযোগিতা। দেশের যে কোনো প্রান্ত হতে যাতায়াত সুবিধা সুন্দর হওয়ায় প্রচুর ভ্রমণপিপাসুর আগমন ঘটে কুয়াকাটায়। ভ্রমণস্পট হিসেবে সুন্দরবন, ফাতরাবন, গঙ্গামতি, মিশ্রিপাড়া, আলীপুর-মহিপুর মৎস বন্দর, সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, ঝাউ বাগান, কুয়াকাটার সেই ঐতিহাসিক কুয়াসহ আকর্ষণীয় সব দৃষ্টিনন্দন স্থানগুলোর কথা আর না-ই বা বললাম।
বিনিয়োগের গর্বিত স্থান : এর সঙ্গে নতুন করে তৈরি হচ্ছে সবুজের সমারোহ ‘৩১৩ এগ্রো ফার্ম’। ফলে এখনও পর্যটকদের তুলনায় হোটেলের সংখ্যা কমই বলা যায়। হোটেল-রিসোর্ট বিনিয়োগে নিশ্চিত লাভবান হওয়া সম্ভব। প্রান্তিক অঞ্চল হওয়ায় এখনও প্রচুর খালি জমি রয়েছে। মালিক থেকে গ্রহণ করে যেখানে মিল কারখানা, হোটেল, মার্কেট, পার্ক, মিনি চিড়িয়াখানাসহ দর্শক চাহিদাসম্পন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা যায়। পদ্মা সেতু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত সুবিধা শতভাগ চিন্তামুক্ত। ফলে দিনদিন জমির দামও বেড়েই চলছে। কোনো স্থাপনা না করে জমি কিনে প্লট আকারে বিক্রি করেও বেশ মুনাফা অর্জন করা সম্ভব। ব্যবসায়ী কিংবা কোম্পানিগুলো চাইলে কুয়াকাটায় নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করে আর্থিকভাবে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে পারে।
দেশের সম্মান ও ঐতিহ্য : একটি দেশের মূলশক্তির অন্যতম জায়গা অর্থনৈতিক সক্ষমতা। কুয়াকাটায় বিনিয়োগ করলে যেমন বহির্বিশ্বে নিজ দেশকে রিপ্রেজেন্ট করা যাবে, তেমনি দেশের উন্নয়নের গর্বিত অংশীদার হিসেবেও দাঁড় করাতে পারবে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানকে। আরো যেসব কারণে কুয়াকাটা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পরিণত হয়েছে, তা হলো- পায়রা বন্দর, তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, সাব-মেরিন, পর্যটনকেন্দ্র, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও পর্যটনস্পট। বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাজুড়ে রয়েছে এ পর্যটনকেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ার নান্দনিক স্পট, সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের দেশ, সাগরকন্যাখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা বাংলাদেশে একটি আদর্শ বিনিয়োগবান্ধব অবস্থান তৈরি করেছে। আমার কুয়াকাটা, আমাদের কুয়াকাটা, সবার কুয়াকাটা, বাংলাদেশের কুয়াকাটা। সম্মান ও ঐতিহ্য রক্ষায় কুয়াকাটার বিকল্প নেই। কুয়াকাটায় আসুন, ভ্রমণ করুন, করুন বিনিয়োগ।
লেখক : চেয়ারম্যান, ৩১৩ প্রোপার্টিজ লিমিটেড, কুয়াকাটা, পটুয়াখালী।