ইসলামের দৃষ্টিতে মালিক-কর্মচারী ভাই ভাই; বরং কর্মচারী মালিকের পরিবারভুক্ত। কর্মচারীর জন্য মর্যাদাপূর্ণ জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয় ইসলাম। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের গোলামরা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীনস্থ করেছেন। সুতরাং কারও ভাই যদি তার অধীনে থাকে, তাহলে সে যা খায়, তাকেও যেন তা খেতে দেয়; সে যা পরিধান করে, তাকেও যেন তা পরিধান করায়।’ (বোখারি : ২৫৪৫)।
যথাসময়ে বেতন পরিশোধ করা নববি আদর্শ : কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পর্ক স্নেহ-শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস-বিশ্বস্ততার। উভয়ের কাছে উভয়ের প্রাপ্য রয়েছে। প্রত্যেককে আপন কর্তব্য পালনে আন্তরিক ও সচেষ্ট হতে বলেছে ইসলাম। কর্মচারীর বেতন-ভাতা নিয়ে টালবাহানা করা নিচু মানসিকতার পরিচয়। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজ। বেতন-ভাতা কর্মচারীর ন্যায্য অধিকার। অনতিবিলম্বে তার হক আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কর্মচারীর ঘাম শুকানোর আগেই তার প্রাপ্য বেতন দিয়ে দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৪৪৩০)।
বেতন আটকে রাখা বা না দেওয়া অপরাধ : কারণে-অকারণে কর্মচারীর বেতন-ভাতা আটকে রাখা বা না দেওয়া জঘন্য অপরাধ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির বিপক্ষে থাকব। তার মধ্যে একজন ওই ব্যক্তি, যে কাউকে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে তার থেকে কাজ বুঝে নিয়েছে; অথচ তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়নি।’ (বোখারি : ২২২৭)।
বেতন নিয়ে টালবাহানা করা অমানবিক : কর্মচারীর বেতন পরিশোধ করতে নয়-ছয় করা জুলুম। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কর্মচারীর বেতন পরিশোধে ধনী ব্যক্তির টালবাহানা করা জুলুম।’ (বোখারি : ২২৮৭)।
কর্মচারীর ব্যাপারে রাসুল (সা.)-এর অন্তিম কথা : জীবনের শেষ মুহূর্তে উম্মতের উদ্দেশ্যে রাসুল (সা.)-এর সর্বশেষ অসিয়ত ছিল, ‘তোমাদের অধীনস্থদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো।’ (সুনানে আবি দাউদ : ৫১৫৮)।