বদান্যতা
নিয়ামুল ইসলাম
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, যে ১০ জন সাহাবিকে রাসুল (সা.) দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছিলেন, আমি তাদের একজন। বিদায় হজের বছর আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি। রাসুল (সা.)-এর কাছে খবর পৌঁছালে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তখন শরীরের ব্যথা আরো বেড়ে গিয়েছিল।
বললাম, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার দৈহিক জ্বালা-যন্ত্রণা কঠিন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। যা আপনি নিজ চোখে দেখছেন। আমি একজন ধনী মানুষ; কিন্তু উত্তরাধিকারী বলতে আমার একমাত্র কন্যা। তাহলে কি আমি আমার সম্পদের দুই-তৃতীয়াংশ আল্লাহর রাস্তায় দান করে দেব?’ তিনি বললেন, ‘না।’ বললাম, ‘তাহলে কি অর্ধেক সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান করব?’ বললেন, ‘না।’ আমি বললাম, ‘তাহলে কি এক-তৃতীয়াংশ দান করব?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, এক-তৃতীয়াংশ দান করতে পার, তবে এক-তৃতীয়াংশও অনেক বেশি। কেননা, তুমি যদি তোমার উত্তরাধিকারীদের ধনবান অবস্থায় ছেড়ে যাও, তাহলে তা এর থেকে ভালো যে, তুমি তাদের কাঙাল করে ছেড়ে যাবে এবং তারা লোকদের কাছে হাত পাতবে।
মনে রেখ, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে যা কিছু ব্যয় করবে, তোমাকে তার বিনিময় দেওয়া হবে। এমনকি তুমি যে খাবার তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দাও, তার বিনিময়ও তুমি পাবে।’ বললাম, ‘আমি কি আমার সঙ্গীদের ছেড়ে মক্কায় থেকে যাব?’ বললেন, ‘তুমি যদি তোমার সঙ্গীদের মরার পর জীবিত থাক এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে কোনো কাজ কর, তাহলে তার ফলে তোমার মর্যাদা ও সম্মান বাড়বে। সম্ভবত তুমি বেঁচে থাকবে। এমনকি তোমার দ্বারা মোমিনরা উপকৃত হবে, কাফেররা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ এরপর রাসুল (সা.) দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার সাহাবিদের হিজরতে পরিপূর্ণতা দান কর এবং তাদের হিজরত থেকে পেছনে ফিরিয়ে দিও না।’ কিন্তু মিসকিন সাদ ইবনে খাওলা তার মৃত্যু মক্কায় হওয়ায় তিনি দুঃখ ও শোক প্রকাশ করেন। (বোখারি : ১২৯৫)।