ইবাদতের মাধ্যম ইতিকাফ

মুহাম্মদ বিন কামেল

প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

ইসলামে ইতিকাফ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যা বিশেষ করে রমজানের শেষ দশকে পালন করা হয়। এটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মসজিদে অবস্থান করে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকার একটি পদ্ধতি। ইতিকাফ পালনের মাধ্যমে মানুষ দুনিয়াবি ব্যস্ততা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন করতে পারে।

ইতিকাফের গুরুত্ব : ‘ইতিকাফ’ অর্থ- নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করা এবং নিজেকে সেখানেই আবদ্ধ রাখা। ইসলামি শরিয়তে ইতিকাফ বলতে বোঝায়, একজন মুসলিম নফল বা ফরজ ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করবে এবং নিজেকে দুনিয়াবি কাজকর্ম থেকে দূরে রেখে ইবাদতে ব্যস্ত রাখবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি বছর রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। তার সাহাবিদেরও ইতিকাফ পালনের প্রতি উৎসাহিত করতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি একদিন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে ইতিকাফ করে, আল্লাহ তার ও জাহান্নামের মধ্যে তিনটি পরিখা তৈরি করে দেবেন। যার প্রতিটির দূরত্ব পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যকার দূরত্বের চেয়েও বেশি।’ (তিরমিজি : ৮০৯)।

ইতিকাফের প্রকার ও বিধান : ইতিকাফ তিন ধরন। যথা- ১. ওয়াজিব ইতিকাফ : মানত হিসেবে কেউ ইতিকাফ করার নিয়ত করলে তা পালন করা আবশ্যক। ২. সুন্নত ইতিকাফ : রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ করা সুন্নতে মোয়াক্কাদা। ৩. নফল ইতিকাফ : যে কোনো সময়ে কেউ চাইলে ইতিকাফ করতে পারে।

ইতিকাফের নিয়ম ও শর্ত : ইতিকাফকারীকে মসজিদে থাকতে হবে। সেখানে থেকে আল্লাহর ইবাদতে ব্যস্ত থাকতে হবে। শুধু প্রয়োজনীয় কাজের জন্য মসজিদের বাইরে যাওয়া যেতে পারে। যেমন- অজু করা, খাবার খাওয়া বা জরুরি প্রয়োজনে সাড়া দেওয়া। ইতিকাফ অবস্থায় বেশি বেশি কোরআন, দোয়া ও ইস্তিগফার পাঠ এবং নফল নামাজ আদায় করা উত্তম।

ইতিকাফের উপকারিতা : এতে আত্মশুদ্ধি অর্জন হয়। আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। গোনাহ থেকে মুক্তির সুযোগ পাওয়া যায়। ধৈর্য ও সংযম চর্চা করা সম্ভব হয়। যথানিয়মে ইতিকাফ করলে ইহ-পরকালে অফুরন্ত বরকত ও সওয়াব লাভ করা যায়।