ঢাকা শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পবিত্র কাবা ঘরের বরকত ও মর্যাদা

মাওলানা মুহাম্মদ মুনিরুল হাছান
পবিত্র কাবা ঘরের বরকত ও মর্যাদা

মোমিনের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানিত ও মর্যাদাবান গৃহ হলো পবিত্র কাবা। মানব সৃষ্টির বহু আগে আল্লাহতায়ালা কাবাঘর সৃষ্টি করেছেন। এটি পৃথিবীর সর্বপ্রচীন গৃহ। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় সর্বপ্রথম গৃহ, যা মানবমণ্ডলীর জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে, তা ওই ঘর, যা বাক্কায় (মক্কার অপর নাম) অবস্থিত, ওইটি সৌভাগ্যযুক্ত এবং পুরো বিশ্ববাসীর জন্য পথপ্রদর্শক। (সুরা আলে ইমরান : ৯৬)। পবিত্র কাবা ঘরের চারপাশে মসজিদুল হারাম আল্লাহতায়ালা কর্তৃক সংরক্ষিত একটি নিরাপদ স্থান। এখানে মানুষ, পশু-পাখি, মশা-মাছি, কীটপতঙ্গ হত্যা করা নিষিদ্ধ। এখানকার গাছপালা এমনকি ঘাসও সব ধরনের অনিষ্টতা থেকে মুক্ত। ইমাম ইবনে কাসীর (রহ.) বলেন, এটি এমন একটি নগরী, যেখানে আসলে সব স্বেচ্ছাচারী ও অত্যাচারীর দম্ভ-অহংকার চূর্ণ হয়ে যায়। যারা এটিকে ভাঙতে আসে, তারা নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যায় এবং লাঞ্ছিত হয়ে পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হয়। ইয়ামেনের বাদশাহ আবরাহা বিশাল হস্তি বাহিনী নিয়ে পবিত্র কাবাঘরকে ধ্বংস করতে এসে নিজেই ধ্বংস হয়ে যায়।

পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর

পবিত্র কাবাঘরই হলো পৃথিবীতে সর্বপ্রথম ইবাদতের জন্য নির্মিত ঘর। আল্লাহতায়ালা মানুষ সৃষ্টির আগে ফেরেশতা ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। ফেরেশতারা আল্লাহর কাছে একটি নির্দিষ্ট ইবাদতখানার জন্য আবেদন করলেন। আল্লাহতায়ালা ফেরেশতাদের কাবারূপে সপ্তম আকাশে ‘বায়তুল মামুর’ নির্মাণ করেন। প্রথম সৃষ্টি মানুষ হজরত আদম (আ.) বায়তুল মামুরে ইবাদত করতেন। হজরত আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠানো হলে তিনি আল্লাহর কাছে আসমানের বায়তুল মামুরের মতো জমিনেও একটি ঘরের আবেদন করেন। আল্লাহতায়ালা তার আবেদন কবুল করেন এবং ফেরেশতাদের বায়তুল মামুরের আকৃতি নিয়ে পৃথিবীতে পাঠান। সুতরাং কাবাঘরই হলো পৃথিবীর সর্বপ্রথম গৃহ। এর আগে পৃথিবীতে কোনো ঘর নির্মিত হয়নি।

হজরত আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) পৃথিবীর সর্বপ্রথম মসজিদ কোনটি? তিনি বলেন, মসজিদুল হারাম। আমি বললাম, এর পর কোনটি? তিনি বলেন, মসজিদুল আকসা। আমি আবার বললাম, এই দুটি মসজিদ নির্মাণের ব্যবধান কত? তিনি বললেন চল্লিশ বছর (বোখারি : ৩১২৭)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির আগে আল্লাহর আরশ পানির ওপর ছিল। ইমাম বগভী (রহ.) বলেন, জগৎ সৃষ্টির দুই হাজার বছর আগে আল্লাহতায়ালা এক ঘূর্ণিঝড় প্রেরণ করলে এই পানিকে প্রচণ্ডভাবে নাড়া দেয়। এতে বর্তমান কাবাঘর যেখানে রয়েছে সেখানে গুম্বুজের মতো ফেনার সৃষ্টি হয়। আল্লাহতায়ালা মাটি ও পর্বতমালা সৃষ্টি করে একে স্থিতিদান করেন। পৃথিবীর স্থিতিদানকারী সর্বপ্রথম পাহাড়টি হলো আবু কুবাইস নামক পাহাড়। যা কাবাঘরের অতি নিকটেই অবস্থিত।

কাবাঘর নির্মাণ

ইবনে জারীর তাবারী (রহ.) বলেন, আল্লাহতায়ালা হজরত আদম (আ.) কে ওহি পাঠালেন যে, আমার আরশ বরাবর নিচে একটি সম্মানিত স্থান রয়েছে। তুমি সেখানে আমার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য একটি ঘর নির্মাণ কর এবং আমার আরশের চারপাশে তাওয়াফকারী ফেরেশতাদের মতো তুমিও এর তাওয়াফ কর। সেখানে আমি তোমার এবং তোমার সন্তানদের সব দোয়া কবুল করব। আদম (আ.) বললেন, স্থানটা তো আমি চিনি না। তখন আল্লাহতায়ালা একজন ফেরেশতা পাঠিয়ে স্থানটি চিহ্নিত করে দেন। ফেরেশতাদের সহযোগিতায় আদম (আ.) পবিত্র কাবাঘর নির্মাণ করেন। কাবাঘর নির্মাণ শেষে হজরত জিবরাইল (আ.) হজরত আদম (আ.)-কে হজের নিয়মকানুন শিক্ষা দেন। আদম (আ.)-এর পুত্র হজরত শীস (আ.) এটিকে মেরামত করেন। হজরত নুহ (আ.)-এর সময় মহাপ্লাবনে এটি ধ্বংস হয়ে গেলে আমালিকা গোত্রের লোকেরা এটিকে পুনর্নির্মাণ করেন।

হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.) কর্তৃক পুনর্নির্মাণ

হজরত আদম (আ.) কর্তৃক নির্মিত এই কাবাঘর হজরত নুহ (আ.)-এর সময়ে মহাপ্লাবন পর্যন্ত অক্ষত ছিল এবং ওই সময়ের মহাপ্লাবনে এটি বিধ্বস্ত হয়। অতঃপর হজরত ইবরাহিম ও হজরত ইসমাইল (আ.) আল্লাহর নির্দেশে কাবাঘর পুনর্নির্মাণ করেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, স্মরণ কর, যখন ইবরাহিম ও ইসমাইল কাবাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিল। তারা দোয়া করছিল, পরওয়ারদেগার, আমাদের থেকে কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ। (সুরা বাকারা : ১২৭)। অন্য আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যখন আমি ইবরাহিমের জন্য এ গৃহের স্থান ঠিক করে দিলাম।’ (সুরা হজ : ২৬)।

কাবাঘর নির্মাণের সময় হজরত ইসমাইল (আ.) পাথর নিয়ে আসতেন আর ইবরাহিম (আ.) তা গাঁথুনি করতেন। গাঁথুনি যখন উপরে উঠল, এক পর্যায়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে লিফটের মতো ব্যবস্থা হলো আরেক কুদরতি নিদর্শন ‘মাকামে ইবরাহিম’-এর মাধ্যমে। এই মাকামে ইবরাহিম কাবাঘরের পাশে এখনও সংরক্ষিত রয়েছে। এই পাথরটি হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর প্রয়োজন অনুসারে ওপরে-নিচে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওঠানামা করত। আল্লাহতায়ালা বলেন, এতে রয়েছে মাকামে ইবরাহিমের মতো প্রকৃষ্ট নিদর্শন। আর যে এর ভেতরে প্রবেশ করবে, সে নিরাপত্তা লাভ করবে। (সুরা আলে ইমরান : ১৯৭)।

কাবা শরিফের মর্যাদা

পবিত্র কাবাঘর পৃথিবীর সব মসজিদের প্রাণকেন্দ্র। এর রয়েছে অসাধারণ সম্মোহনি শক্তি। এর ভিত্তি হয়েছিল শিরকমুক্ত একত্ববাদের ওপর ইখলাস ও একনিষ্ঠতার উপকরণ দিয়ে। সেই আদিকাল থেকে এই ঘরটির মর্যাদা এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল যে, এখানে আপনজন হত্যাকারীকে পেলেও তাকে হত্যা করা হতো না। অপবিত্র অবস্থায় এই ঘরে প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। আল্লাহতায়ালা বলেন, আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, এতেকাফ বা অবস্থানকারী ও রুকু সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখো (সুরা বাকারা : ১২৫)।

হজরত হাসান বসরী (রহ.) বলেন, জাহেলিয়্যাহ যুগে কোনো ব্যক্তি যদি কাউকে হত্যা করত এবং এর পর সে তার গলায় এক টুকরো উলের কাপড় পেঁচিয়ে কাবাঘরে প্রবেশ করত, তাহলে মারাত্মক প্রাণঘাতী পিতা বা ভ্রাতার হত্যাকারীকে পেয়েও কেউ এখানে প্রতিশোধ নিত না। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে ওই পবিত্র জায়গা ত্যাগ করত। এজন্য আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর যে ওর মধ্যে প্রবেশ করে, সে নিরাপত্তা লাভ করবে।’ (সুরা আলে ইমরান : ৯৭)। আল্লাহতায়ালা অন্য আয়াতে বলেন, ‘অতএব তারা ইবাদত করুক এই গৃহের রবের, যিনি তাদেরকে ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং ভয়ভীতি থেকে তাদের নিরাপদ করেছেন।’ (সুরা কুরাইশ : ৩-৪)।

কাবাঘর বিশ্বশান্তি ও স্থায়িত্বের কারণ

আল্লাহতায়ালা কাবাঘরকে বিশ্ববাসীর স্থিতিশীলতা ও শান্তির কারণ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, আল্লাহ সম্মানিত গৃহ কাবাকে মানুষের স্থীতিশীলতার কারণ করেছেন এবং সম্মানিত মাসগুলোকে। (সুরা মায়েদা : ৯৭)। হজরত আতা (রা.) বলেন, পবিত্র কাবা বিশ্বের স্তম্ভ, যতদিন এর দিকে মুখ করা হবে এবং হজ পালিত হবে, ততদিনই জগৎ প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যদি কোনো সময় খানায়ে কাবার সম্মান বিলুপ্ত হয়ে যায়, তখন মহাবিশ্বকেও বিলীন করে দেওয়া হবে। সমগ্র বিশ্ব মুসলিমের অন্তরে আল্লাহতায়ালা কাবা শরিফের মর্যাদাকে এমনভাবে স্থাপন করে দিয়েছেন, যার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য যাবতীয় ভাবাবেগ ও প্রবৃত্তিকে বর্জন করতেও মানুষ কুণ্ঠাবোধ করে না। যে একবার দেখে তার মনে ওই ঘরকে পুনরায় দেখার আগ্রহ তৈরি হয়। হজরত মুজাহিদ (রহ.) বলেন, কোনো মানুষ কাবাঘরের জেয়ারত করে তৃপ্ত হয় না, বরং প্রতিবার জেয়ারতের পর পুনরায় যাওয়ার বাসনা নিয়ে ফিরে আসে।

বায়তুল্লাহর হজ বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মেলন

বিশ্বের সব মুসলমান যে এক উম্মত, হজ মৌসুমে এর বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এখানে সমবেত হয়। হজরত ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক কাবাঘর নির্মিত হলে আল্লাহতায়ালা আদেশ দেন, ‘বিশ্ববাসীকে এই ঘর তাওয়াফের জন্য আহ্বান জানাও।’ তিনি আরজ করলেন, হে প্রভু! এত জনমানবহীন প্রান্তর। আমার আহ্বান জগদ্বাসী কীভাবে শুনবে? আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমার দায়িত্ব কেবল ঘোষণা দেওয়া আর মানুষের কানে পৌঁছানো আমার কাজ। অতঃপর তিনি মাকামে ইবরাহিমের ওপর দাঁড়িয়ে বা আবু কুবাইস পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেন- ওহে লোকজন তোমাদের পালনকর্তা নিজ গৃহ নির্মাণ করে তার জিয়ারত তোমাদের ওপর ফরজ করে দিয়েছেন, সুতরাং তোমরা এই ঘর প্রদক্ষিণ কর। পয়গাম্বরের এ আহ্বানে আল্লাহতায়ালা বিশ্বের সব কোণে পৌঁছে দেন। যারা এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে লাব্বাইক বলেছে, তারা এ ঘরের জেয়ারত লাভে ধন্য হবে।

বায়তুল্লাহ শরিফে সালাত আদায়ের ফজিলত

রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, কাবাগৃহের ওপর প্রতিদিন ১২০টি রহমত নাজিল হয়। তাওয়াফকারীদের জন্য ৬০টি, নামাজ আদায়কারীদের জন্য ৪০টি এবং যারা কাবাঘরের দিকে তাকিয়ে থাকে, তাদের জন্য ২০টি রহমত বরাদ্দ থাকে (বায়হাকি)। অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, কোনো বান্দা যদি নিষ্ঠার সঙ্গে মর্যাদাবান এই ঘরে এক রাকাত নামাজ আদায় করে, তাকে আল্লাহতায়ালা এক লাখ রাকাত নামাজের সমান সাওয়াব দান করবেন। (মুসনাদে আহমদ)। অপর হাদিসে রয়েছে, যে ব্যক্তি যথাযথভাবে সাতবার বায়তুল্লাহ তথা কাবাঘর তাওয়াফ করে এবং দুই রাকাত সালাত আদায় করে, তার একটি গোলাম আজাদ করার সওয়াব হয়। আল্লাহতায়ালা তাওয়াফের প্রতি কদমে একটি করে গোনাহ মাফ করেন, একটি নেকি দান করেন এবং দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। (তিরমিজি-৯৫৯)।

মোমিন হৃদয়ের তীর্থ পবিত্র কাবা

মুমিনরা পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থাকুক না কেন প্রতিদিন পাঁচবার ওই কাবার দিকে মুখ করে সালাতে দাঁড়ায়। প্রত্যেক মুসলমান আল্লাহর কাছে নতশিরে দোয়া করেন জীবনে একবার হলেও যেন কাবাঘরকে নিজের চোখে দেখে। কাবাঘরের চতুর্দিকে আল্লাহর বান্দাদের তাওয়াফের দৃশ্য প্রতিটি মোমিনের নয়ন জুড়িয়ে তাদের মনে আবেগের স্পর্শ তৈরি করে। এ জন্য আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আল্লাহরই জন্য মানবকুলের ওপর সেই ঘরের হজ করা (ফরজ) যে সেটা পর্যন্ত যেতে পারে। আর যে অস্বীকারকারী হয়, তবে আল্লাহ সমগ্র জাহান থেকে বেপরোয়া।’ (সুরা আলে ইমরান : ৯৮)।

হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল

(আ.)-এর স্মৃতিবিজড়িত কাবা

এককালের জনমানবহীন বিরান পাহাড়ি উপত্যকাকে আল্লাহতায়ালা হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়ার বরকতে সমগ্র পৃথিবীবাসীর জন্য সংযোগস্থল করে দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, যখন ইবরাহিম বলল, পরওয়ারদেগার! এ স্থানকে তুমি শান্তির নগরীতে পরিণত কর এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও কেয়ামতে বিশ্বাস করে, তাদের ফলের দ্বারা রিজিক দান কর। বললেন, যারা অবিশ্বাস করে, আমি তাদের কিছুদিন ফায়দা ভোগ করার সুযোগ দেব। অতঃপর তাদের বলপ্রয়োগ দোজখের আজাবে ঠেলে দেব। সেটা নিকৃষ্ট বাসস্থান। (সুরা বাকারা-১২৬)। হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া ছিল সুদূরপ্রসারী ফলদায়ক। সেই যুগ থেকে এই নগরটি নিরাপদ ও কল্যাণময়।

হাজরে আসওয়াদ স্থাপন

হজরত ইবরাহিম (আ.) যখন বর্তমানে হাজরে আসওয়াদ যেখানে রয়েছে সেখানে নির্মাণ শেষ করলেন, তখন তিনি হজরত ইসমাইল (আ.)-কে বললেন, এখানে এমন একটি পাথর স্থাপন কর, যা তাওয়াফকারীদের অন্তরে নাড়া দেয়। এমন সময় আল্লাহর নির্দেশে পার্শ্ববর্তী আবু কুবাইস পাহাড় থেকে আওয়াজ এলো, হে ইসমাইল! আমার কাছে একটি গচ্ছিত সম্পদ রয়েছে, যা হজরত আদম (আ.) জান্নাত থেকে এনেছিলেন এবং তিনিই এই পাথরটিকে কাবার দেওয়ালে স্থাপন করেছিলেন। মধ্যখানে হজরত নুহ (আ.) এর সময় মহাপ্লাবনে কাবাঘর ভেঙে গেলে আমি পাহাড়ের ভেতর এটিকে লুকিয়ে রেখেছিলাম। অতঃপর এটিকে আপন জায়গার স্থাপন করা হলো। নবীজি (সা.) বলেন, হাজরে আসওয়াদ একটি জান্নাতি পাথর। তার রং দুধের চাইতেও সাদা ছিল। অতঃপর আদম সন্তানের পাপরাশি এটিকে কালো বানিয়ে দিয়েছে। (তিরমিজি- ৮৭৭)।

লেখক : সিনিয়র শিক্ষক (ইসলাম শিক্ষা), চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজ

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত